দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ মে:একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর খনন করার কাজ চলছিল। উঠে এল, দুষ্প্রাপ্য এক মূর্তি। ঘটনাস্থল, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক দাঁতন। যেখনে মাটি খুঁড়লেই ইতিহাস! মোগলমারির বৌদ্ধবিহার থেকে শুরু করে মনোহরপুরের শতাব্দী প্রাচীন নাট্যশালা কিংবা কাকরাজিতে রেবন্তের মূর্তি- দাঁতন জুড়ে শুধুই ইতিহাস। ফের, রবিবার পুকুর খনন করার সময় সুপ্রাচীন এক মূর্তি উদ্ধার করা হয় মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সেই কাকরাজিত গ্রামে। জানা গিয়েছে যে, কাকরাজিত গ্রামেরর বিখ্যাত মহাপ্রভু মন্দির সংলগ্ন কুন্ডু পুকুর খনন করতে গিয় উপস্থিত শ্রমিকরা একটি ভগ্ন নারীমূর্তি উদ্ধার করেন। প্রথমিকভাবে গবেষকদের একাংশ মনে করছেন যে, উদ্ধার হওয়া ওই মূর্তিটি পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ শতকের তৈরি। যদিও, ভগ্ন মূর্তিটির গঠনশৈলী দেখে অনেকে আবার এটি সপ্তম কিংবা অষ্টম শতকে নির্মাণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার সীমান্তবর্তী এলাকা দাঁতন ঐতিহাসিকভাবে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ একটি এলাকা। এখানে ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ মহাবিহার। মোগলমারির এই বৌদ্ধ বিহার প্রত্নতাত্বিকদের কাছেও এক দিগন্ত খুলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এখানকার মাটি খুঁড়ে পাওয়া গিয়েছে রেবন্তের মূর্তিও। এক কথায় দাঁতনের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য সব ঐতিহাসিক নমুনা। যদিও, সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া মূর্তিটি কোন সময়কালের তা নিশ্চিতভাবে গবেষণার পরেই জানা যাবে। ইতিমধ্যেই, এই গ্রাম থেকে বিভিন্ন সময়ে পাওয়া বিষ্ণুমূর্তি সহ একাধিক মূর্তি গাছের তলায় রেখে ভক্তিভরে পুজো করে আসছেন এলাকাবাসীরা। এই প্রসঙ্গে গবেষক অতনু নন্দন মাইতি জানিয়েছেন, “সমগ্ৰ দাঁতন জুড়েই রয়েছে নানান ইতিহাসের নিদর্শন। তবে, এই মূর্তিটি সম্ভবত কোনো দেবীর মূর্তি। কারণ এই মূর্তিটি ভারী অলংকারে ভূষিতা রয়েছেন। পাশাপাশি, মাথায় রয়েছে একটি মুকুটও। স্বাভাবিকভাবেই ভগ্নপ্রায় এই মূর্তিটি কোনো দেবীর মূর্তি হতে পারে।”