thebengalpost.net
ধর্নায় করোনা যোদ্ধারা :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ জুন: এজেন্সি’র মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক সাফাই কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন ২০১৬ সাল থেকে কিংবা তারপর থেকে। ২০২০’র অতিমারী পর্বে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর, তাঁদের মধ্যে কিছুজন-কে ‘করোনা যোদ্ধা’ বা ‘কোভিড ওয়ারিয়র’ হিসেবে নিয়োগ করা হয় রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে। সেই কাজ-ও ছিল চুক্তি ভিত্তিক। তবে, এজেন্সি’র তুলনায় বেতন (বা, ভাতা) ছিল প্রায় দ্বিগুণ (মাসিক ১৫ হাজার)। ২০২০’র সেপ্টেম্বর থেকে এই বেতনেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৫ জন করোনা যোদ্ধা কাজ করছিলেন। এদিকে, করোনা’র প্রকোপ কমে যাওয়ায় বা অতিমারী চলে যাওয়ায়, ২০২২-এর ৩১ মার্চের পর পশ্চিম মেদিনীপুর সহ সারা রাজ্যের এই সকল করোনা যোদ্ধাদের সঙ্গে আর চুক্তি বাড়ায়নি বা নবীকরণ করেনি রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। অন্যদিকে, নতুন এজেন্সি-ও আর কাজে ফেরাতে আগ্রহী নয় এই কর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে, উভয় সঙ্কটে পড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৪ জন (একজন মারা গেছেন) কর্মী। তাঁরা পুনরায় এজেন্সি’র মাধ্যমে সাফাইকর্মী হিসেবেই কাজে যোগদান করতে চেয়ে বারবার আবেদন-নিবেদন করেছেন। জানিয়েছেন সর্বত্র। কিন্তু, কোনো কাজ হয়নি!

thebengalpost.net
ধর্নায় করোনা যোদ্ধারা :

তাই, গতকাল অর্থাৎ রবিবার শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের (তৎকালীন, শালবনী করোনা হাসপাতালের) ৫ জন ‘কোভিড ওয়ারিয়র’ বা ‘করোনা যোদ্ধা’ অবস্থানে বসেছিলেন। সোমনাথ, সুমিত, সৌমেন, শম্পা, গোরী-দের বক্তব্য, গত ২০১৬ সাল থেকে তাঁরা এজেন্সি’র সাফাই কর্মী হিসেবে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ২০২০ সালে করোনা আসে। শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়। তাঁরাও করোনা আক্রান্ত হন। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা আক্রান্তদের ‘কোভিড ওয়ারিয়র’ হিসেবে সাময়িকভাবে করোনা হাসপাতালগুলোতে নিয়োগ করার পরামর্শ দেন। সেই মতো মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে এদের নিয়োগ করা হয়। সেই তালিকায় ছিলেন শালবনী সহ জেলার ১৫ জন (পরে একজনের মৃত্যু হয়)। এদিকে, চুক্তি অনুযায়ী, করোনা পর্ব পেরিয়ে আসার পর তাঁদের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে, মহাবিপদে পড়েছেন এই ধরনের কর্মীরা। সোমনাথ, শম্পা প্রমুখের দাবি, “গত ২ মাস আমাদের কোনো কাজ নেই। আমরা সংসার চালাতে পারছিনা! আমাদের পুনরায় সাফাই কর্মী হিসেবেই নিযুক্ত করুক এজেন্সি।” এদিকে, নতুন এজেন্সি (অল সার্ভিস গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেড) তাঁদের কাজে ফেরাতে আগ্রহী নয়। এমনকি, ব্লক ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকেও আবেদন জানানো হয়েছে, এই কর্মীদের পুনরায় কজে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। তা সত্ত্বেও এজেন্সি কর্তৃপক্ষ অনড়। অগ্যতা রবিবার ধর্না বা অবস্থানে বসেন শালবনীর ৫ কর্মী। সোমবার এঁদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র। তিনি জানিয়েছেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। আমরা সহানুভূতির সঙ্গে দেখছি কি করা যায়। ওঁরাও আবেদন জানিয়েছেন। আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করব।”

thebengalpost.net
শ্যামপদ পাত্র :