দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ মে:’আমার দেওয়াল আমার হক’- কুড়মি দেওয়ালে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধ হল জঙ্গলমহল জুড়ে! ‘ঘাগর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুড়মি সম্প্রদায়ের এই কর্মসূচি শুক্রবার থেকে শুরু হল জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরে। প্রসঙ্গত, ST সম্প্রদায়ভুক্ত করা সহ একাধিক দাবিতে ‘ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি’র তরফে খেমাশুলিতে যে ১২ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার অন্যতম হল- যতদিন না কুড়মিদের ST সম্প্রদায়ভুক্ত করা হয় বা তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়া হয় ততদিন অবধি কোন রাজনৈতিক দলকে কুড়মি এলাকায় বা কুড়মিদের দেওয়াল রাজনৈতিক প্রচার বা দেওয়াল লিখন এর জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। শুক্রবার শালবনী ব্লকের চ্যাঙশোলে, খড়্গপুর গ্রামীণের ট্যাঙাশোলে এই কর্মসূচি পালিত হল। কুড়মিদের তরফে নিজেদের দেওয়ালে লিখে দেওয়া হল- কুড়মি দেওয়ালে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধ।

thebengalpost.net
কুড়মি দেওয়ালে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধ:

এই বিষয়ে শালবনীর বাসিন্দা তথা ‘ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি’র সদস্য সুমন মাহাতো জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুড়মিদের দেওয়ালে শাসক কিংবা বিরোধী কোন দলকেই রাজনৈতিক প্রচার বা দেওয়াল লিখন করতে দেওয়া হবে না।” যতদিন না অবধি তাঁদের ST তালিকাভুক্ত বা এসটি ঘোষণা করা হচ্ছে, ততদিন অবধি জঙ্গলমহল জুড়ে এই কর্মসূচি তাঁরা পালন করে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেই একটি বড়সড় বার্তা দিল কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতৃত্বরা। যদিও, শাসকদলের তরফে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “প্রথমত এটা কুড়মিদের আন্দোলন নয়। কুড়মিদের একটা অংশের আন্দোলন। তবে, এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ওঁরা ওদের মতো প্রতিবাদ করতেই পারেন। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুড়মি সহ সকল আদিবাসীদের জন্যই ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছেন। তাঁদের এই দাবির বিষয়েও রাজ্য সরকার আন্তরিক। কিন্তু, ST ঘোষণার বিষয়ে রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই। রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। বাকি কাজ তো কেন্দ্র করবে। আশাকরি ওঁরা প্ররোচনায় পা না দিয়ে, ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থাকবেন, তাঁর হাত আরও শক্ত করবেন।” ইতিমধ্যে, আদিবাসীদের নিয়ে আগামী ১৪-মে তাঁরা (জেলা তৃণমূল) জমায়েত করবেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, কুড়মি আন্দোলনের নেতাদের ফের একবার চরম আক্রমণ করেছেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি।

শনিবার তৃণমূলের বর্ধিত সভায় অজিত মন্তব্য করেছেন, “কিছু কুড়মি নেতা খালিস্তানিদের মতো আচরণ করছেন। সাধারণ কুড়মিদের ভুল বোঝাচ্ছেন।” কিছুটা একই সুরে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়াও। বলেছেন, “বাইরের সাহায্য নিয়ে একটি অংশ আন্দোলন করছেন! আমরা রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। ST করার দায় কেন্দ্রের। অথচ, মুখ্যমন্ত্রীকে গালমন্দ করা হচ্ছে।” অন্যদিকে, জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের মন্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুড়মি সহ সকল আদিবাসীদেরই ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তাঁদের জন্য কিছুই করেননি! উন্নয়ন, কর্মসংস্থান কিছুই হয়নি। কুড়মি সহ সকল আদিবাসীরা তাই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন!”

thebengalpost.net
কুড়মিদের প্রতিবাদ: