দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ সেপ্টেম্বর: এবার নেশা করার প্রতিবাদ করায় ভাইয়ের হাতে খুন হতে হল দাদাকে! ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর পৌরসভার ৩৩ নং ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লী এলাকার। মৃত দাদার নাম- জি. নভজিৎ রাও। অভিযুক্ত ছোট ভাইয়ের নাম- জি. সুমিত রাও। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেল নাগাদ। ঘটনাটি সম্পর্কে মৃত ব্যক্তির মেজ ভাই জি. সুমন রাও জানিয়েছেন, “আমাদের ছোট ভাই সবসময় গাঁজা-র নেশা করত! এর আগেও ওকে নিয়ে অশান্তি হয়েছে। বাড়িতে ওকে খুঁজে পুলিশ পর্যন্ত এসেছে। কিন্তু, ও শুধরায়নি। রবিবার দুপুরেও বাড়ির ভেতরে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে নেশা করছিল। আমি আর আমার দাদা প্রতিবাদ করি। বন্ধু-বান্ধবদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিই। সেই রাগেই ফুঁসছিল ও! বলছিল আমি আসছি, তোদের দেখে নেব! এর কিছুক্ষণ পর সে একটি বাইক নিয়ে ফিরে আসে। তারপর বাড়ি থেকে মোটর বাইক বের করার ভান করে। সেই সময় আমার দাদা বাড়ির উঠোনে বসে বসে মুরগি-কে খাওয়ার খাওয়াচ্ছিল। ও ওই টুকুর মধ্যেই বাইকের গতিবেগ ভয়ঙ্করভাবে বাড়িয়ে দিয়ে দাদাকে সজোরে পেছন থেকে ধাক্কা মারে! দাদা ছিটকে গিয়ে কংক্রিটের রাস্তার উপর পড়ে। রাস্তার পাশেই কংক্রিটের নর্দমার দেওয়ালে মাথায় আঘাত লাগে। কান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়!” তারপরই প্রথমে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নভজিৎ-কে। সেখান থেকে সন্ধ্যা নাগাদ রেফার করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ রাত্রি ৮ টা নাগাদ বছর ৪০-৪৫ এর নভজিৎ রাওয়ের মৃত্যু হয়! পুলিশ সুমিত-কে আটক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে
তিন ভাইয়ের সংসারে বড় দাদা নভজিৎ এর কাছেই থাকত ছোট ভাই সুমিত। দাদার খাওয়ার দোকান ছিল খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে। মেজ ভাই সুমনের ছিল ভুসিমাল দোকান। কিন্তু, বছর ৩০ এর ছোট ভাই নেশা করেই ঘুরে বেড়াতো। যা নিয়ে সংসারে ছিল তীব্র অশান্তি। তাতে কি! নেশাগ্রস্ত সুমিতের কোনো পরিবর্তন হয়নি। শেষমেশ প্রতিবাদ করায় চিরতরে প্রাণ গেল ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালনকারী দাদারই! মেজ ভাই সুমন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দাঁড়িয়ে কড়া শাস্তির দাবি করল- “ও যেন চরম শাস্তি পায়। ফাঁসি বা যাবজ্জীবন হয়। এরকম ভাই সংসারে থাকার চেয়ে না থাকা ভালো! আমরা আনাথ হয়ে গেলাম।” নভজিৎ এর মেয়ে কলেজে পড়ছে। ছেলেও এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলেজে ভর্তি হবে। সব মিলিয়ে, নেশাগ্রস্ত ভাইয়ের নিষ্ঠুরতায় দাদার সংসার এখন অথৈ জলে!