দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ ডিসেম্বর: থমকে গিয়েছিল সোনালী’র ‘একলা আকাশ’! সেই আকাশেই ‘শুকতারা’ হয়ে এসেছে মেঘান। সব ‘খুশি’ এখন ওকে ঘিরেই! সেই মেঘান দেখতে দেখতে দুই পূর্ণ করে তিনে পা দিল রবিবার (১৯ ডিসেম্বর)। মেঘানের জন্মদিনের খুশি ভাগ করে নিতেই, সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আনন্দপুর (কেশপুর ব্লকের) থেকে সোনালী পৌঁছে গিয়েছিলেন মেদিনীপুর শহরের একপ্রান্তে আবাস সংলগ্ন জামবাগানে। শহরের প্রায় ৩০-৪০ জন প্রান্তিক শিশুর সঙ্গে দুপুর-টা কাটালেন সপরিবারে। খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনের সাথে সাথে, উপহার-চকলেট-কেক তুলে দিয়ে রেল কলোনীর টিনা, পায়েল, রাজু, চিন্টু, মণি-দের মুখে একটু হাসি ফোটালেন শীতের দুপুরে। গত প্রায় আড়াই বছর ধরে জীবনযুদ্ধে যে ভয়াবহ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সোনালী, সেই লড়াইয়ের মাঝেই নিজেও একটু আনন্দ খুঁজে নিলেন এভাবেই।
প্রসঙ্গত, মেঘান পৃথিবীতে আসার চার মাস আগেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়েছেন সোনালী! বিয়ের মাত্র মাস ছয়েকের মধ্যেই, যখন তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় জাতীয় সড়কের উপর এক ভয়াবহ অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁর স্বামী তথা আনন্দপুর থানার পাচরা (লাগারডাঙা) গ্রামের বছর ৩৩ এর যুবক তথা প্রতিশ্রুতিমান ব্যবসায়ী সৌমিত্র ঘোষ। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে জীবনের সবথেকে কঠিন লড়াই! ২০১৯ এর ২৮ আগস্ট সোনালী’র উপর গুরুদায়িত্ব অর্পণ করে বিদায় নিয়েছেন সৌমিত্র। ২০১৯ এর ১৯ ডিসেম্বর পৃথিবীতে এসেছে মেঘান! রবিবার দুই পেরিয়ে তিনে পা দিল সে। তার জন্মদিনের খুশি ভাগ করে নিতেই শহরের রেল কলোনীর প্রান্তিক শিশুদের সঙ্গে বনভোজনের আয়োজন করেছিলেন সোনালী। শুধু বনভোজন নয়, কচিকাঁচাদের হাতে তুলে দেওয়া হল উপহার (টুপি), কেক, চকলেট প্রভৃতি। ছিলেন সোনালী’র পরিবারের সদস্যরা।