দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ জুন: “এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার”। কবির বাণী (ছাড়পত্র/সুকান্ত ভট্টাচার্য) থেকে গেছে বইয়ের পাতাতেই! বাস্তবের মাটিতে শিশুদের একমুঠো ভাত জোগাড় করতে আজও শ্রম দিতে হয়। গতকাল ‘আন্তর্জাতিক শিশু শ্রম বিরোধী দিবস’ (১২ জুন) এর দিনও স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গ্রামে সেই চিত্রই দেখা গেল! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার বীরসিংহ গ্রাম। ‘বর্ণপরিচয়’ এর স্রষ্টা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান। সেই গ্রামের ছাতা কারখানায় কাজ করছে, গ্রামের একঝাঁক স্কুল পড়ুয়া কিশোর। সঙ্গে তাদের অভিভাবক-অভিভাবিকারাও। অতিমারী পরিস্থিতিতে, কার্যত লকডাউনের মধ্যে একমুঠো ভাত জোগাড় করতেই এই পথ বেছে নিতে হয়েছে বলে জানালেন শিশুদের সঙ্গে থাকা অভিভাবকরা। এক অভিভাবিকা বললেন, “স্কুল বন্ধ। মিড ডে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই, আমাদের সঙ্গে ওরাও কাজ করছে। একমুঠো ভাত তো জোগাড় করতে হবে!”

thebengalpost.in
বিদ্যাসাগরের বীরসিংহ গ্রাম :

thebengalpost.in
ছাতা কারখানায় কাজ করছে শিশুরা :

অতিমারীর প্রকোপ রুখতে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ শিশুদের স্কুলের দরজা! মাঝখানে মাসখানেকের জন্য নবম-দ্বাদশের ক্লাস হয়েছিল মাত্র। এই পরিস্থিতিতে, ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ পরিবারের শিশুরা বঞ্চিত মিড ডে মিলের আহার থেকে। এদিকে পরিবারের আয়ও কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে “অকারণে কেন ঘুরে বেড়াবে, কাজ করুক ছাতা কারখানায়”, এমনটাই মত শিশুদের বাবা-মায়েদের। সপ্তাহে আয় হচ্ছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা! এটাই বা কম কিসের, মনে হচ্ছে তাঁদের। আর শিশু শ্রমের বিষয়টি? ওদের কাছে যেন, “ভাত দেবার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই” প্রবাদের মতোই অপ্রিয় সত্য!

thebengalpost.in
কাজে ব্যস্ত বীরসিংহের শিশুরা :