দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১৬ জুন: পূর্ব মেদিনীপুর থেকে হুগলি, নদীয়া থেকে উত্তর দিনাজপুর কিংবা কোচবিহার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা- রাজ্য জুড়ে ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ স্বীকার করেছে ২৭৩ জনের ১ নম্বর করে বাড়া হয়েছিল! তবে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছাড়া মানিক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ হঠাৎ কেন এই ২৭৩ জনের নম্বর-ই বাড়াতে গেল, তা নিয়ে সদুত্তর নেই কারুর কাছে! দায়সারা যুক্তি, আবেদনের ভিত্তিতে ২৭৩ জনের নম্বর বাড়ানো হয়েছিল! যে পর্ষদের কাছ থেকে সামান্য দাবি বা ন্যায্য অধিকার আদায় করতে কলকাতা হাইকোর্টে ছুটতে হয় চাকরি প্রার্থীদের, তারাই হঠাৎ কেন আগবাড়িয়ে মাত্র ২৭৩ জনের নম্বর বাড়িয়ে দিল, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। উল্লেখ্য যে, ২০১৭- এর ডিসেম্বর মাসে (প্রথম তালিকা প্রকাশ ২০১৭ এর ফেব্রুয়ারিতে) হঠাৎ করে এই ২৬৯ (পর্ষদের মতে ২৭৩) জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। অপরদিকে, প্রশ্ন ভুলের জন্য এই নম্বর বাড়াতেই কয়েক হাজার প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীকে আদালতের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হয়েছে পরবর্তী চার বছর! শেষমেশ ২০২১ এর শেষের দিকে দুই দফায় প্রায় ৮৫০ (১২১ ও ৭৩৮) জনের নম্বর বাড়ানো হয়। আর তাই, পর্ষদের যুক্তি মানেনি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ। দুর্নীতির তত্ত্বেই সিলমোহর দিয়ে, চাকরি বাতিল ও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

thebengalpost.net
পূর্ব মেদিনীপুরের ভাইরাল তালিকা:

এদিকে, ২৬৯ জন বাতিল শিক্ষকের তালিকা গত ১৩ জুন, সোমবার-ই পর্ষদের তরফে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলিতে। গত ২-৩ দিনে সেই তালিকা সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল-ও হয়ে গেছে। ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপে। ইতিমধ্যে, হুগলির আরামবাগের শাসকদলের নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দুই মেয়ে কিংবা পূর্ব বর্ধমানের বাম নেতার মেয়ের চাকরি বাতিল হওয়ার খবর-ও ভাইরাল হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরের কন্টাই, তমলুক, এগরা, হলদিয়া প্রভৃতি এলাকার ৩০ জন বাতিল শিক্ষকের একটি তালিকা ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গেছে, হুগলিতে ৬৯, নদীয়াতে ১৪, বাঁকুড়ায় ১১, বর্ধমানে ১২ এরকম বাতিল শিক্ষকদের তালিকা ঘুরছে। তবে, তার থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ হল রাজ্য জুড়ে আরও হাজার হাজার শিক্ষক এই মুহূর্তে দুঃশ্চিন্তায়! সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১৪ টেট থেকে ২০১৭ ও ২০২১ এ যে নিয়োগ হয়েছে, সঠিকভাবে তদন্ত হলে নাকি ২০ থেকে ৩০ শতাংশের চাকরি নিয়ে টানাটানি হতে পারে। যদিও, মানতে নারাজ পর্ষদ। তবে, ইতিমধ্যেই পর্ষদের পক্ষ থেকে সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করা হয়েছে, সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার হবে তার শুনানি। আর এ নিয়েই নিন্দুকেরা এখন বলছেন, শুধু ওই সমস্ত শিক্ষকরাই নয়, ভয় পেয়েছে পর্ষদ-ও!

thebengalpost.net
হুগলির তালিকা :

thebengalpost.net
হুগলির তালিকা:

thebengalpost.net
নদীয়ার ভাইরাল তালিকা :