দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ জানুয়ারি: কোথাও মানবিকতা, কোথাও অমানবিকতা! এদিনই পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের সততা ও মানবিকতার সৌজন্যে স্মার্টফোন ও টাকা ফিরে পেয়েছেন এক যুবক। আর, সেই একইদিনে, এক যুবককে অকারণে মারধর করার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করলেন এলাকাবাসী। নতুন বছরের প্রথম দিনে (শনিবার) ঘটনাটি ঘটেছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর শহরের কৌশল্যা এলাকায়। জানা গেছে, শুক্রবার বর্ষবরণের রাতে অভিজিৎ পড়িয়া নামে এক যুবক নিজের পিসি বাড়ি থেকে রাত এগারোটা নাগাদ খাওয়া-দাওয়া করে বাড়ি ফেরার পথে, কৌশল্যা ফাঁড়ির নাকা চেকিংয়ে হেনস্থার স্বীকার হয়। অভিযোগ, অভিজিত-কে পুলিশ জোর করে কৌশল্যা ফাঁড়ির ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর, ওই যুবক বাড়িতে ফোন করার কথা বললে, তার ফোন ভেঙে দেওয়া হয় এবং বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর, ভোরের দিকে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ ওই এলাকার মানুষজন। তাঁরা শনিবার সন্ধ্যার মুখে কৌশল্যা ফাঁড়ি ঘেরাও করেন এবং রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন।

thebengalpost.net
কৌশল্যা আউট পোস্ট :

অভিজিৎ পড়িয়া বলেন, “গতকাল রাতে পিসির বাড়ি থেকে খাওয়া-দাওয়া করে এগারোটা নাগাদ আমি হেঁটে হেঁটে হাতে ফোন নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। এখানে তখন গাড়ির চেকিং চলছিল। আমাকে একজন পুলিশ ডাকলেন। আমাকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করল ভিডিও রেকর্ডিং কেন করছ? আমি বললাম, ভিডিও রেকর্ডিং তো করছি না স্যার। তখন আমার হাত থেকে জোর করে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আমাকে লকআপে ঢুকিয়ে দিল। কিছুক্ষণ রাখার পরে আমি বললাম, আমার বাড়িতে জানানো হোক। তখন আমাকে বলা হল, আমি ওঁদের সংবিধান শেখাচ্ছি! সেই অপরাধে আমাকে লকআপ থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়! কেন মেরেছে জানিনা। ফাইবার স্টিক দিয়ে মেরেছে। ফোন ভেঙে দিয়েছে। আজকে আমরা পাড়ার লোক একসাথে এসে এখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এবং আমরা জানতে চাইছি, কি কারনে মারা হয়েছিল। পথ অবরোধ করেছি। যতক্ষণ না ইনচার্জ পার্থবাবু আসছেন, ততক্ষণ আমরা উঠবো না”! যদিও, ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাসে কিছুক্ষণ পরে (সন্ধ্যা ৮ টা নাগাদ) অবরোধ উঠে যায়। অভিজিৎ পড়িয়ার মা শিলা পড়িয়া বলেন, “কি কারণে মেরেছে এখনও সঠিক জানিনা। মেরেছেন যিনি তিনি এখনও আসেননি! কেন আসছেন না পার্থবাবু! এইভাবে আমার ছেলেকে মারা হয়েছে কেন। ওর কি দোষ ছিল। কি কারণে বাড়িতে ফোন করা হয়নি। আমি যখন আমার ছেলেকে ফোন করি, তখন আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করা হয়েছে! আমি বললাম, ছোটর মা বলছি, তখন আমাকে পুলিশ বলল তোর ছোট গায়েব হয়ে গেছে! আমি জানতে চাই, কি কারণে আমার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে?” কৌশল্যা ফাঁড়ির ইনচার্জ পার্থ চ্যাটার্জি-কে ফোন করা হলে তিনি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন! বলেন, “গতকাল রাতে মদ খেয়ে এখান দিয়ে ফিরছিল ওই যুবক। এত রাতে কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞাসা করলে, সে আমাদের ফাঁড়ির এক পুলিসকর্মীকে ঠেলাঠেলি করে। সঠিকভাবে চলতে পারছিল না বলে, তাকে মদ্যপ অবস্থায় এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

thebengalpost.net
অবরোধ :