দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ অক্টোবর: দীর্ঘ টালবাহানা শেষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৯টি স্থায়ী সমিতির দায়িত্বে এলেন ৯ জন কর্মাধ্যক্ষ। প্রথম দফায় গত ২০ সেপ্টেম্বর (২০২৩) জেলা পরিষদের ৯টি স্থায়ী সমিতি গঠন করা হয়েছিল। এরপর, গত ৬ অক্টোবর ৬-টি স্থায়ী সমিতির সদস্যরা দলীয় নির্দেশ মেনে বেছে নিয়েছিলেন ৬ জন কর্মাধ্যক্ষ-কে। একইসঙ্গে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ৩টি স্থায়ী সমিতিতে রদবদলও করা হয়েছিল ওই দিন। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া স্থায়ী সমিতি; ক্ষুদ্র শিল্প ও বিদ্যুৎ স্থায়ী সমিতি এবং শিশু ও নারী উন্নয়ন (বা, নারী ও শিশু কল্যাণ) স্থায়ী সমিতিতে রদবদল করা হয়েছিল। অবশেষে, ওই তিনটি স্থায়ী সমিতিতে ৩ জন কর্মাধ্যক্ষ মনোনীত হলেন সোমবার (৩০ অক্টোবর)। দায়িত্ব নিলেন যথাক্রমে- শ্যামপদ পাত্র, চন্দন কুমার সাহা এবং শান্তি টুডু।

thebengalpost.net
শ্যামপদ পাত্র-কে শুভেচ্ছা জানালেন দলনেতা মহম্মদ রফিক ও সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি :

শিক্ষার দায়িত্বে এলেন বর্ষীয়ান শ্যামপদ পাত্র। দাসপুরের জেলা পরিষদ সদস্য তথা রাজ্যের প্রবীণ এই শিক্ষক নেতা এর আগেও শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে, বিগত (২০১৮-‘২৩) বোর্ডে অবশ্য তিনি জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ হলেন জেলার আরেক শিক্ষক নেতা তথা গড়বেতা ২ নং (গোয়ালতোড়ের) ব্লকের জেলা পরিষদ সদস্য চন্দন কুমার সাহা। বিগত বোর্ডের শেষ পর্বে কৃষি ও সেচ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মনোনীত হয়েছিলেন চন্দন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই তৃনমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর ‘অনুগামী’ রামপ্রসাদ গিরি। স্বাভাবিকভাবেই কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন রামপ্রসাদ। সেই জায়গাতেই দায়িত্বে এসেছিলেন চন্দন সাহা। এবারই প্রথম জেলা পরিষদের সদস্য হয়েছেন ডেবরা-র শান্তি টুডু। আর, প্রথমবার জয়ী হয়েই দলের আশীর্বাদে জুটেছে কর্মাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ! পেশায় শিক্ষিকা শান্তি টুড-কে দল প্রথমে শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে ভাবলেও, রদবদলের পর তাঁকে শিশু ও নারী উন্নয়ন স্থায়ী সমিতিতে নিয়ে আসা হয়। আর, সোমবার (৩০ অক্টোবর) ওই স্থায়ী সমিতিরই কর্মাধ্যক্ষ মনোনীত করা হয়েছে তাঁকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর ৯টি স্থায়ী সমিতি গঠনের পরই দলের অন্দরে নানা ক্ষোভ তৈরী হয়েছিল! কোন স্থায়ী সমিতিতেই জায়গা দেওয়া হয়নি বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শ্যামপদ পাত্র-কে। চন্দন কুমার সাহা-কেও নিয়ম রক্ষার একটি স্থায়ী সমিতিতে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। এরপরই, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ পৌঁছয়! শেষ পর্যন্ত, শ্যামপদ পাত্র এবং চন্দন সাহা-কে এবারও কর্মাধ্যক্ষ করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সেই মতো ৬ অক্টোবর ৬ জন কর্মাধ্যক্ষ বেছে নেওয়া হয় এবং ৩টি স্থায়ী সমিতির রদবদল করা হয়। শেষমেষ দলীয় নির্দেশ মেনে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৯টি স্থায়ী সমিতি-র কর্মাধক্ষ্য হিসেবে যাঁরা দায়িত্ব নিলেন, তাঁরা হলেন যথাক্রমে- নির্মল ঘোষ (পূর্ত); আবু কালাম বক্স (জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ); আশিস হুদাইত (কৃষি, সেচ ও সমবায়); শ্যামপদ পাত্র (শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া); শান্তি টুড (শিশু ও নারী উন্নয়ন); তপন কুমার প্রধান (বন ও ভূমি); প্রতুল দাস (খাদ্য); চন্দন কুমার সাহা (ক্ষুদ্র শিল্প ও বিদ্যুৎ) এবং জ্যোতিপ প্রসাদ মাহাত (মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন)।