দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ আগস্ট: চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছরের পর বছর ধরে ‘সহবাস’ করেছেন বাম জমানার পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী তথা জঙ্গলমহলের দাপুটে সিপিআইএম নেতা! সম্প্রতি, সিপিআইএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ রীতিমত তথ্য-প্রমাণ সহ রাজ্য কমিটির হাতে তুলে দিয়েছিলেন মেদিনীপুর শহরের এক মহিলা। তদন্ত শুরু করেছিল দল। আর তার মধ্যেই একটি ভিডিও (সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট) ভাইরাল হয়। ভিডিও-তে যে ব্যক্তিকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে দেখা যায়, তিনি সুশান্ত ঘোষ বলেই ওয়াকিবহাল মহলের দাবি। আর, ভিডিও-তে থাকা মহিলা সেই ‘অভিযোগকারিনী‘ বলেও সিপিআইএমের বিভিন্ন সূত্রের দাবি। তারপরই, আজ, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মেদিনীপুর শহরের জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা কমিটির জরুরি বৈঠকে সুশান্ত-কে ‘জেলা সম্পাদক‘ সহ অন্যান্য সমস্ত দলীয় পদ থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তী জেলা সম্মেলন হওয়ার আগে অবধি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিজয় পাল-কে জেলা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

thebengalpost.net
জেলা কার্যালয় থেকে বিদায় নেওয়ার আগে সুশান্ত ঘোষ :

শুক্রবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের মীরবাজারের জেলা কার্যালয়ে সিপিআইএমের জেলা কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, রবীন দেব প্রমুখ। দীর্ঘ বৈঠকের পর পশ্চিম মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক হিসাবে বিজয় পালের নাম ঘোষণা করা হয়। বৈঠক শেষে মীরবাজারের দলীয় কার্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুশান্ত জানান, “আমি কোন মন্তব্য করব না! যা বলার ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক বলবেন।” ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কেও কোন মন্তব্য করতে চাননি সুশান্ত। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক বিজয় পাল বলেন, “উনি (সুশান্ত) অব্যাহতি চেয়েছিলেন। রাজ্য কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। কিছু অভিযোগ ছিল, যা খতিয়ে দেখছে রাজ্য কমিটি।” উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালে তৎকালীন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুশান্তের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর মন্ত্রী তাঁকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে মেদিনীপুর শহরের এক মহিলা অভিযোগ করেন। তিনি এও অভিযোগ করেছেন, এক দিন সুশান্ত তাঁকে বাড়িতে ডাকেন এবং তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর পর একাধিক বার চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করেন সুশান্ত। কাউকে সেই কথা না জানানোর জন্য তাঁকে হুমকিও দেন। তাঁর বিয়ের পরেও প্রাক্তন মন্ত্রী তাঁকে যোগাযোগ রাখতে বাধ্য করেন বলেও বর্তমানে চাকুরিজীবী ওই মহিলার অভিযোগ। এ জন্য তাঁর সাংসারিক জীবনে অশান্তি হচ্ছে বলে দাবি করেন বছর ৪৫-র ওই মহিলা। তবে, ভাইরাল ভিডিও (যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট) অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসেও ওই মহিলার সঙ্গে সুশান্ত ঘনিষ্ঠ হয়েছেন এবং তা মহিলার ইচ্ছেতেই! সেই ভিডিওটি গোপন ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ডও করা হয়। আর তার দু’এক মাসের মধ্যেই অভিযোগ! সুশান্ত-অনুগামী সিপিআইএম নেতাকর্মীরা তাই বলছেন ‘পুরোটাই চক্রান্ত’! সিপিআইএমেও এমনটা হয়? নিন্দুকেরা বলেন, “গোপন ক্যামেরা বা সিসি ক্যামেরা তো তাই বলছে!”

thebengalpost.net
ভাইরাল ভিডিওর একটি অংশ (সংগৃহীত, যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট):