দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ ডিসেম্বর: নৃশংস, পাশবিক বললেও কম বলা হয়! পরকীয়ার জেরে ২ বছরের শিশুকন্যাকে খুন হতে হল মায়ের হাতে! এমনই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার উত্তরবাড়ে। জানা গেছে, শনিবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার অন্তর্গত বাখনাবাড় গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তরবাড় গ্রামে ২ বছরের শিশুকন্যা দীপ্তি জানার রহস্যমৃত্যু হয়। সেইসময়, দীপ্তির মা পূজা জানান, দুপুর বেলায় বাড়ির উঠোনে লেপ রোদে দিয়েছিলেন তিনি। সেই লেপের মধ্যেই খেলছিল শিশুটি। এরপর তিনি রান্না করতে চলে যান। পরে এসে দেখেন, মেয়ে লেপের মধ্যে আপাদমস্তক জড়িয়ে রয়েছে! কোনো সাড়াশব্দ নেই। নিথর দেহ! তবে, তার এই গল্প বিশ্বাস করেনি পুলিশ! প্রতিবেশীরাও সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, লেপে জড়িয়ে কী করে মৃত্যু হতে পারে! পূজাকে ঘিরে প্রতিবেশীরা প্রবল চাপ সৃষ্টি করেন। এরপরই বদলে যায় পূজার বয়ান। স্বীকার করেন, শিশুটিকে স্তন পান করানোর সময় তার বুকে কামড়ে দিলে, ক্রোধে-যন্ত্রণায় শিশুটিকে বালিশ চাপা দিয়ে দেন তিনি! তিনি বুঝতে পারেননি যে এর ফলে মেয়ে মারা যাবে। তবে, তাঁর এইসব বয়ানও বিশ্বাস করেননি পুলিশ কিংবা প্রতিবেশীরা কেউ। ধীরে ধীরে রহস্য উদঘাটিত হয়। এই ঘটনায় উঠে আসে প্রতিবেশী ‘বিবাহিত’ যুবক দেবাশিস মন্ডলের নাম। জানা গেছে স্বামী দেবাশিস জানা কর্মসূত্রে আন্দামানে থাকেন। স্বামী দেবাশিস জানার অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী দেবাশিস মন্ডলের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। ফোনে প্রেমালাপের সময় হয়তো শিশুকন্যা ‘ডিস্টার্ব’ করেছিল, সেই সূত্রেই খুন হয়েছে শিশুকন্যা! পিংলা থানার পুলিশ মা ও প্রেমিক দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, লকডাউনে দেড়বছর ঘরে থাকার পর গত ৫ দিন আগেই ফের আন্দামানে গেছেন স্বামী দেবাশিস জানা। দেড়বছর স্বামী ঘরে থাকায় লুকিয়ে চুরিয়ে চলছিল প্রেম! ৫-৬ দিন আগে স্বামী চলে যাওয়ায়, সেই প্রেম আরও ঘনিষ্ঠ হয়। বছর ২০ ‘র ওই গৃহবধূর এক বোনও স্বীকার করেছে, তার দিদির সঙ্গে দেবাশিস মন্ডলের প্রেমের সম্পর্কের কথা। এও জানা গেছে, ঘটনার সময় পূজা ফোনে কথা বলছিল প্রেমিক দেবাশিসের সাথে। সেই সময় মেয়ে স্তনপান করছিল। কোনো কারণে, প্রেমালাপে বাধাপ্রাপ্ত হয়েই মেয়েকে ‘খুন’ করেছেন মা! পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দেবাশিস ও পূজার বিয়ে হয় বছর তিনেক আগে। দীপ্তি তাঁদের একমাত্র সন্তান। বাড়িতে পূজার শ্বশুর-শাশুড়ি অর্থাৎ দেবাশিসের মা ও বাবা থাকেন। তবে, ঘটনার সময় তাঁরা দু’জনই বাইরে ছিলেন। সেই সুযোগেই খুন করা হয় তাঁদের নাতনিকে। এই ঘটনায় জেলা জুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। সকলেরই প্রশ্ন, কোন পথে যাচ্ছে এই সমাজ!