সুদীপ কুমার খাঁড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ জুন: বাবা গৃহশিক্ষকতা করেন। চোখের সামনে বাবাকে কঠোর পরিশ্রম করে সংসার চালাতে দেখেছেন সুশোভন। বাবা-মা’র মুখে হাসি ফোটাতে সুশোভন চিকিৎসক হতে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকেই, ডাক্তারির সর্বভারতীয় পরীক্ষা NEET এর জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে গেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন- ২ নম্বর ব্লকের গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত ললাট গঙ্গাধর পাঠশালা হাইস্কুলের মেধাবী ছাত্র সুশোভন গিরি। অবশেষে লক্ষ্য পূরণ হল সুশোভনের। তার বাবা-মা’রও সব কষ্ট সার্থক হওয়ার পথে। সম্প্রতি প্রকাশিত নিট পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী ৭২০’র মধ্যে ৬৫২ নম্বর পেয়ে সারা ভারতে ৭৭৬৯ র্যাঙ্ক (All India Ranking) করেছে সুশোভন। নিজের ক্যাটাগরিতে তার র্যাঙ্ক ৬৭৭ ( আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণী/ EWS)। সুশোভনের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তার স্কুল।
দাঁতন থানার গোকুলপুর গ্রামের বাসিন্দা সুশোভনের বাবা সতীকিংকর গিরি পেশায় একজন গৃহ শিক্ষক (প্রাইভেট টিউটর)। মা নমিতা গিরি একজন গৃহবধু। সুশোভনেরা দু’ভাই। ছোট ভাই সোহম একই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারে বড় হয়ে ওঠা সুশোভন সামনে থেকে বাবা-মা’র কঠোর পরিশ্রম উপলব্ধি করেছেন। তাই, প্রথম থেকেই লক্ষ্যে অবিচল ছিল সে। মেধাবী সুশোভন ২০২১ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও নজরকাড়া ফল করেছিল। ৭০০’র মধ্যে পেয়েছিল ৬৮৭। তবে, এবার তাদের মাধ্যমিকে পরীক্ষা দিতে হয়নি। এরপর, বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েই নিটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে সুশোভন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার থেকেও এই নেটের প্রস্তুতিকেই বেশি গুরুত্ব দেয় সে। তা করতে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল (৩৪৭/৫০০) একটু খারাপ হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় নিজেই সে কথা জানায় সুশোভন।
সুশোভন এও জানায়, “বড় কোন সেন্টার নয়, অনলাইন কোচিং এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের সহযোগিতায় আমি এই ফল করতে পেরেছি।” সুশোভন ভবিষ্যতে একজন সফল কার্ডিওলজিস্ট বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হতে চায়। গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যম স্কুলের ছাত্রের এই রেজাল্টে খুশি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবকান্ত জানা সহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। খুশি সুশোভনের পরিবার-পরিজন, শুভানুধ্যায়ীরা ও এলাকার জনগন। প্রধান শিক্ষক নবকান্ত বাবু জানান, “সুশোভন এই বিদ্যালয়ের পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাসেই প্রথম স্থান অধিকার করে এসেছে। তবে, নিটের প্রস্তুতির জন্য উচ্চমাধ্যমিকে নম্বর ওর একটু কমেছে। বিদ্যালয়ে ওর থেকে তিন-চার জন বেশি নম্বর পেয়েছে।” তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের একটি স্কুল থেকে এবং অত্যন্ত সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা সুশোভনের এই সাফল্যে তিনি গর্বিত বলেও জানান। বিদ্যালয়ের শিক্ষক নারায়ণ মাইতি বলেন, “সুশোভনের এই সাফল্য আগামীদিনে তাঁদের বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের যেমন উৎসাহিত করবে, তেমনি গ্রামীণ এলাকার অনান্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও অনুপ্রাণিত করবে।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…