দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ জানুয়ারি: ব্লকের এক প্রান্তে মিড-ডে মিলের গুণগতমান খতিয়ে দেখলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। আর, অন্য প্রান্তে সেই মিড-ডে মিল নিয়েই অভিযোগ তুলে একটি স্কুলে তালা ঝোলালেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা! অভিযোগ, ১ মাসের বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়ে হয়নি মিড-ডে মিল (Midday Meal)। শুধু তাই নয়, স্কুলে করা হয়নি সরস্বতী পুজোও। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাই মঙ্গলবার তালা ঝোলালেন বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণী কক্ষ সহ অফিস ঘরে। বারান্দায় বসেই চললো পঠন-পাঠন! জেলায় তথা ব্লকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের মিড-ডে মিলের গুণগত মান যাচাইয়ের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়লো ব্যাপক চাঞ্চল্য। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের রানীসরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের একতাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। অভিযোগ, গত ১ মাস ধরে মিড-ডে মিলের রান্না হয়নি। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ গ্রামবাসীদের। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে স্কুলের গেটে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। এর জেরে শিকেয় ওঠে পঠন পাঠন। স্কুলের বারান্দাতে বসেই চলে পঠন-পাঠন প্রক্রিয়া। শেষ বেলায় হস্তক্ষেপ করতে হয় এস.আই বা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে।

thebengalpost.net
বারান্দায় বসেই চললো পঠন-পাঠন:

উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের একাধিক স্কুলে মিড-ডে মিলের গুণগত মান যাচাই করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তাঁরা যখন ব্লকের কোমিয়াচক বিদ্যাসাগর বিদ্যাভবন, কুশবসান হাই স্কুল প্রভৃতি পরিদর্শনে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময়ই রানীসরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের একতাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটে ঝুললো তালা! প্রসঙ্গত, প্রতিদিনের মতোই আজও স্কুলে এসেছিলেন পড়ুয়া এবং শিক্ষক শিক্ষিকারা। আর, এসেই দেখেন স্কুলের গেটে তালা লাগানো। বিদ্যালয়ের তালার উপরে আরও একটি তালা ঝোলানো হয়েছে! কে বা কারা এই তালা লাগিয়েছে তা জানেন না শিক্ষকরা। তাই স্কুলের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য।‌ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও কেউই তালা খুলতে এগিয়ে আসেননি। অবশেষে বারান্দায় বসে পঠন পাঠন চালানোর সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পঠন পাঠন চললেও মিড-ডে হয়নি, কারণ মিড-ডে মিলের সরঞ্জাম রাখার ঘরেও ঝোলানো হয়েছিল তালা। স্ব-সহায়ক দলের মহিলারা এসেও নিরুপায়! এদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ১ মাস ধরেই স্কুলে হয়নি মিড-ডে মিল। এমনকি, বাচ্চাদের কাছে সরস্বতী পুজোর চাঁদা নিয়েও সরস্বতী পুজো করা হয়নি। আর, সেই কারণে স্কুলে তালা বন্ধ করেছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের মধ্যে পিনাকী দত্ত নামে এক ব্যক্তি জানান, ডিসেম্বর থেকে প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যালয়ে কোনো মিড ডে মিল রান্না হয়নি। রান্না না হলেও রান্না হয়ে যাওয়ার মেসেজ পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সরস্বতী পূজোর চাঁদা নিয়েও কোন পূজো করা হয়নি এবং মিড ডে মিলের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কেকা নন্দ গোস্বামী অধিকারী জানান, “কে বা কারা তালা লাগিয়েছে তা আমরা জানিনা। তালা লাগানোর কি কারণ সেটাও জানিনা। যদি কারো কোন সমস্যা থেকে থাকে আমাদের সঙ্গে এসে সরাসরি কথা বলুক।” মিড ডে মিল নিয়ে ওঠা অভিযোগ এড়িয়ে যান শিক্ষিকা। স্কুল বন্ধ হওয়া নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ মাণ্ডিও।‌ বিকেল নাগাদ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক গৌতম হালদার জানান, “সমস্যার সমাধান কর হয়েছে।” তিনি এও জানান, কয়েকদিন একটু সমস্যা হয়েছিল। আগামীদিনে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।

thebengalpost.net
নিরূপায় শিক্ষিকা:

thebengalpost.net
পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল: