thebengalpost.net
জমি দখলের অভিযোগ:

তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ফেব্রুয়ারি :একশো দিনের কাজ ঘিরে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর চরম বিবাদ পশ্চিম মেদিনীপুরে! জব সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকা কর্মীর রায়ত জমি দখল করার অভিযোগ উঠল দলেরই অপর গোষ্ঠী, তথা বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। এমনকি, জব সুপারভাইজারকে ফোনে হুমকি দেওয়ার কল রেকর্ডও প্রকাশ্যে এল! ঘটনাটি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নং নম্বর ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন জাড়া গ্রামের। জানা যায়, জাড়া গ্রামের জব সুপারভাইজার পম্পা চন্দ্র তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের শিকার। ‘মাস্টার রোলের কাগজ না দিলে তাঁর রায়ত জায়গা দখল নেওয়া হবে’, এই হুমকি ফোনের কল রেকর্ডও প্রকাশ্যে এসেছে! পম্পার অভিযোগ, তাঁকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আর, হুমকি ফোনের পরদিনই তাঁর রায়ত জায়গা দখল করে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে! প্রকাশ্যে অন্য যুক্তি খাড়া করলেও, পরোক্ষে তা অন্য গোষ্ঠীর লোকজন স্বীকারও করে নিয়েছে। ঘুরপথে ইনকামের বড়সড় ‘উৎস’ বলেই কি ‘অশান্তি’ বারবার? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরাও।

thebengalpost.net
জমি দখলের অভিযোগ:

প্রথমে হুমকি ফোন, তারপর জব সুপারভাইজারের রায়ত জায়গা দখল নিল তৃণমূলেরই অপর গোষ্ঠীর লোকজন। এনিয়ে জাড়া এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি অভিজিৎ রায়ের দাবি, তাঁদেরই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোক উমাশঙ্কর চৌধুরী জব সুপারভাইজারকে হুমকি দিয়েছে। তার কারণ, জব সুপারভাইজার মাস্টার রোলের কাগজটি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন। উমাশঙ্কর চৌধুরী মাস্টার রোলের সেই কাগজটি চেয়েছিল, কিন্তু তাঁকে দেওয়া হয়নি বলেই প্রথমে হুমকি ফোন এবং পরে‌ জায়গা দখল! উমাশঙ্কর চৌধুরী’র কার্যকলাপের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলেও অভিজিৎ জানিয়েছেন। অন্যদিকে, চন্দ্রকোনার বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তথা ব্লক তৃণমূলের নেতা উমাশংকর চৌধুরী বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের সময় ওই তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। বর্তমান তৃণমূল বিধায়ককে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন। আর, তারাই এখন জব সুপারভাইজারের কাজ করছে। তারাই ১০০ দিনের কাজের দেখভাল করছে। এটা আমাদের তৃণমূল কর্মীরা মেনে নিতে পারেনি! এই নিয়ে একটা ছোটো ঝামেলা হয়েছে, তবে জায়গা দখলের কথা যদি বলেন, ওরা আগে থেকেই বলেছিল পার্টি অফিস করার জন্য জায়গা দেবে, তাই ওই জায়গায় পার্টি অফিস হবে।”

thebengalpost.net
রায়ত জায়গা দখল করার অভিযোগ উঠল:

এই বিষয়ে চন্দ্রকোনার তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সূর্যকান্ত দোলই বলেন, পুরো বিষয়টি তাঁরা শুনেছেন, দলগতভাবে এই বিষয়ে তাঁরা আলোচনাও করবেন। এমন কি ১০০ দিনের কাজে যাতে কোনো রাজনৈতিক দল হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সেটিও তাঁরা দেখবেন! চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, “সরকারি প্রকল্প ১০০ দিনের কাজে প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেখভাল করেন, জব সুপারভাইজারের মাধ্যমে। কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এই কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।” পুরো বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করে দেখবেন, এমনকি প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন বিডিও। তবে, বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস এ নিয়ে জানিয়েছেন, “একশো দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে আমরা বারবার যে অভিযোগ করেছি, এখন শাসকদলের নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই তা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে। জব কার্ড থেকে ওরা কাটমানি খায়, মাস্টার রোলে ভুরি ভুরি দুর্নীতি করা আছে। বছরে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয় ১০০ দিনের কাজের মাস্টা রোল থেকে।” এখন দেখার, জব সুপারভাইজার কবে তাঁর জায়গা ফেরত পান এবং ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কবে রাজনীতি বন্ধ হয়!