দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ জানুয়ারি: ঝাড়গ্রামের পর এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বাঘের আতঙ্ক! আতঙ্কে জঙ্গলে যাওয়াও বন্ধ করলেন গ্রামবাসীরা। খুব প্রয়োজন না থাকলে, জঙ্গলে ভয়ে ঢুকতে চাইছেন না কেউ! গবাদি পশুও সব গোয়ালেই বেঁধে রেখেছেন তারা। সোমবার সকালে নতুন করে এই অজানা জন্তু (বাঘ কিংবা ভারতীয় নেকড়ে)’র পায়ের ছাপ দেখা যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী থানার কন্যাবালি গ্রামের আশিস মাহাতোর বাড়ির উঠোনে। তারপরই, জেলা জুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও বনদপ্তর এখনো একে “নেকড়ের পায়ের ছাপ” বলতে চাইলেও, এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ২০১৮ সালেও বনদপ্তর প্রথমে নেকড়ে বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল! শেষ অবধি বেরিয়েছিল বাঘ! তাই, রীতিমতো আতঙ্কে এলাকাবাসী। তবে, বনদপ্তরের পক্ষ থেকে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে!
উল্লেখ্য যে, ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় থানার সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী থানার বেশ কয়েকটি গ্রামে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ছে এলাকা জুড়ে। সোমবারও মনে করা হচ্ছে ভোরের দিকে জল খেতে ওই বন্য জন্তুটি গ্রামে এসেছিল! রাতে বৃষ্টি হওয়ায় ভিজে মাটিতে পায়ের ছাপ স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় আজ (২৪ জানুয়ারি)। পাশাপাশি, গ্রামের এক বাসিন্দা একঝলক দেখতে পান, জন্তুটিকে। তাঁর মতে, এটা বাঘ হতে পারে। বনদফতর সমগ্র বিষয়টির উপর নজর রাখছে। খাঁচা, নেট সমস্ত কিছুই প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃত ছাগলের মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে। মেদিনীপুর বনবিভাগের আধিকারিক (DFO) সন্দীপ বেরিয়াল জানিয়েছেন,”আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শীতের সময়ে বন্য প্রাণীদের বিচরণ দেখা যায়। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে বনদপ্তর। ওই পায়ের ছাপ দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদের নেকড়ে বলেই মনে হচ্ছে।” এ নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বন্য প্রাণী গবেষক রাকেশ সিংহ দেব জানিয়েছেন, “ভারতীয় ধূসর নেকড়ে (Indian Grey Wolf) হলে পায়ের ছাপের সামনের দিকে নখের নাগ পাওয়া যাবে এবং সামান্য লম্বাটে হবে, কারণ নেকড়ে হল ‘কুকুর’ প্রজাতির। আর, বাঘ (Tiger) হলে ছাপ আকারে একটু বড়, গোল ও নখের দাগ বিহীন হবে।” যদিও, বন দপ্তরের কর্মীরা এখনও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত নন, বাঘ নাকি নেকড়ে বাঘ, তবে, গ্রামবাসীদের দাবি ‘বাঘ’-ই হবে!