স্বর্ণদীপ বাগ, ঝাড়গ্রাম, ৬ মার্চ: গতকাল (রবিবার)-ই মেদিনীপুর শহরের গোপগড় ইকোপার্কে অনুষ্ঠিত বন-বান্ধব উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (PCCF) সৌমিত্র দাশগুপ্ত জানিয়েছিলেন, “মানুষ এবং হাতির সংঘাত আরো কমাতে পরিকল্পনা হচ্ছে। ঝাড়গ্রামে প্রায় ২৫০-৩০০ একটার জমি আমরা চিহ্নিত করেছি। সেখানে এনক্লোজার বানাবো। দুষ্টু হাতিকে ধরে রাখা হবে সেখানে।” তবে, এ নিয়ম যে রামলালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না তা বলাই বাহুল্য! জঙ্গলমহল বাসীর প্রিয় এই দাঁতাল যে মানুষের সাহচর্যে থাকতেই পছন্দ করে। আর, সেভাবেই বিশালাকায় এই পূর্ণবয়স্ক হাতিটি এখন তাঁদের (জঙ্গলমহল বাসীর) আপন বন্ধু হয়ে উঠেছে! কোনো ক্ষতি তো সে করেই না, উল্টে অর্বাচীন লোকজনদের অনেক অত্যাচারও সহ্য করে। তবে, সবাই অবশ্য সমান নয়, অনেকেই রামলাল-কে ভালোবাসে। অনেকে আবার ‘হাতি ঠাকুর’ রূপে আদর-আপ্যায়নও করে। রবিবার ভরদুপুরে যেমন দেখা গেল পানীয় জলের তেষ্টা মেটাতে রামলাল হাজির একেবারে গৃহস্থের উঠোনে। গৃহস্থের লোকজন তা বুঝতে পেরেই তাড়াতাড়ি সাবমারসিবল পাম্প চালিয়ে দেন। প্রাণভরে তেষ্টা মেটায় রামলাল। ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের পুকুরিয়া বীটের অরুনডিহি এলাকার।
গতকাল অর্থাৎ রবিবার দুপুরে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য রামলাল কাজু জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে এসে হাজির হয়। একেবারে এক গৃহস্থের উঠোনে। এরপরই, বাড়ির লোকজন সাবমারসিবল চালিয়ে দিলে, রামলাল ‘প্রাণ ভরিয়ে’ তৃষ্ণা নিবারণ করে। এমনকি, বালতিতে রাখা জল ছিটিয়ে নিজের বিশাল শরীর ঠান্ডাও করে নেয় কিছুটা! তারপর, সামনেই থাকা কলা গাছ ভেঙে, খেয়ে ফের হেলতে দুলতে কাজু বাগানে প্রবেশ করে। বাড়ির লোকজন জানান, প্রায় ১০-১৫ মিঃ ধরে জল খেয়ে, তারপর আধ ঘন্টা ধরে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে কলা গাছ খায়, নষ্ট করে। বাড়ির লোকজনই দূর থেকে সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন। উল্লেখ্য যে, জঙ্গলমহলের মানুষই ভালোবেসে তাঁদের এই প্রিয় হাতিটির নাম রেখেছেন রামলাল। শান্ত স্বভাবের এই হাতিটি এদিনও কারুর কোনো ক্ষতি করেনি। আপাততো হাতিটি ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের আশেপাশেই আছে বলে জানা গেছে।