দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ এপ্রিল: এবারই প্রথম ‘দুয়ারে সরকার’ (Daure Sarkar) শিবির থেকে সরাসরি বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য মানবিক ভাতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত শংসাপত্রের (Disabled Certificate) জন্য নাম নথিভুক্তও করা হচ্ছে শিবির থেকেই। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৬৩টি দুয়ারে সরকারের শিবিরে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে সরাসরি এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া ষষ্ঠ পর্যায়ের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকে মোট ৬৪৬-টি শিবির করা হয়েছে বলে জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী জানিয়েছেন। এছাড়াও, জেলা জুড়ে ১৯১-টি ভ্রাম্যমাণ শিবির বা মোবাইল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। সবমিলিয়ে, ৮৩৭টি শিবির থেকে অন্তত ৩৩ রকমের পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল জেলাবাসীর জন্য।
তবে, ষষ্ঠ পর্যায়ের এই শিবিরে সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দুয়ারে সরকারের শিবিরেই স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান। জেলার ৮৩৭-টি শিবিরের মধ্যে ১৬৩-টি শিবিরে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবা। দিনের শেষে এই শিবির গুলি থেকে মোট ৬১৬৭ জন জেলাবাসী বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করেছেন বলে শনিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী। এর মধ্যে, বিশেষভাবে সক্ষমদের ‘মানবিক ভাতা’র জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১৬৩টি। তার মধ্যে, ৩০ জনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে নিশ্চিত করে শুক্রবার থেকেই ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। স্বয়ং জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী এবং পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার এদিন মেদিনীপুর সদর ব্লকের একটি দুয়ারে সরকারের শিবির পরিদর্শন করে বিশেষভাবে সক্ষম একাধিক ব্যক্তির হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তা তুলে দিয়েছেন। শুক্রবার থেকেই তাঁদের ভাতা চালু করার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, দুয়ারে সরকারের শিবিরে যে গৃহলক্ষ্মীদের ভিড়ই বেশি, তা তথ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন স্বয়ং জেলাশাসক। শনিবার দুপুর ২টো পর্যন্ত শিবির থেকে উপকৃত (৮৩৭টি শিবির থেকে) ১৬ হাজার ৫০০ জনের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার জনই যে মহিলা, তা জানান তিনি। তাঁর মতে, “আমি উত্তরবঙ্গে (দার্জিলিং জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক হিসেবে) ছিলাম। সেখানেও দেখেছি মাসে মাসে পাওয়া ৫০০ বা ১০০০ টাকার মূল্য দরিদ্র, খেটেখাওয়া কিংবা চা বাগানে কাজ করা মহিলাদের কাছে কতখানি! এখানেও জঙ্গলমহলের মহিলাদের কাছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁরা এই টাকা দিয়ে নিজের ওষুধ কিনে খেতে পারছেন কিংবা খুব প্রয়োজনীয় কোনো জিনিস কিনতে পারছেননা। সেজন্যই হয়তো দুয়ারে সরকার শিবিরে মহিলাদের ভিড়ই বেশি! তবে, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতার বিষয়টিও আছে।”