তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ আগস্ট: মাত্র একদিনের টানা বৃষ্টি। আর, এই বৃষ্টির ফলেই বিঘের পর বিঘে জমির ধান জলে ডুবে নষ্টের মুখে। স্বাভাবিকভাবেই, ক্ষোভে ফুঁসছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ ও ২ ব্লকের কয়েকশো কৃষক। জানা যায়, চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের কেলেমি ও পান্ডুয়া মৌজার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে তরাশিয়া খাল। আর এই খাল দিয়েই বয়ে যায় শহরাঞ্চলের জল। খালের উপর দিয়ে যাতায়াতের জন্য ব্রিটিশ আমল থেকে তৈরি করা ছিল একটি কংক্রিটের সেতু। সেই সেতু দিয়েই যাতায়াত করতো দুই ব্লকের হাজারো হাজারো মানুষ। যাতায়াত করতো কৃষি প্রধান এলাকার পণ্যবাহী গাড়ি থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী ট্রেকার।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে হঠাৎ করে সেতুর মাঝের কিছুটা অংশ ধসে যাওয়ায়, সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত। সমস্যায় পড়েন এলাকার মানুষজন। অবশ্য তড়িঘড়ি ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে, যাতায়াতের জন্য ওই খালের উপরেই তৈরি করা হয় একটি কালভার্ট। আর, এর ফলেই দেখা দিয়েছে চরম সমস্যা। ২০১৪ সালের পর থেকে সেই কালভার্টে জল নিকাশি ঠিকমত না হওয়ার কারণে, প্রতি বৎসর বর্ষা আসলেই জমা জলে ৮-৯ টি মৌজার কয়েকশো কৃষি জমি বৃষ্টির জলে ডুবে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই বিষয়ে বারবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও শুধু মিলেছে আশ্বাস। কাজের কাজ কিছুই হয়নি!
এদিকে, সোমবারের বৃষ্টিতে জল জমে চাষের জমি যেন সমুদ্রে পরিণত হয়েছে! ক্ষতির মুখে কৃষিজ ফসল। কোন উপায় না দেখে, মঙ্গলবার চন্দ্রকোনা ১ ও ২ ব্লকের পান্ডুয়া, পিরিজপুর, কেলেমী-র ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা সেই কালভার্ট কাটিয়ে জল নিকাশির ব্যবস্থা করতে হয়। এ নিয়েই এলাকার কিছু মানুষের সঙ্গে গোলমাল বাঁধে। কৃষকদের দাবি, যদি এই কালভার্ট কেটে জল না বের করে দেওয়া হয়, কৃষকদের মারা পড়বেন! অপরদিকে, কিছু মানুষের দাবি, রাস্তা ও কালভার্ট কেটে জল বের করতে গেলে চরম সমস্যায় পড়বেন ২০-২৫ টি গ্রামের মানুষ। এই নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এলাকার মানুষের দাবি, দ্রুত প্রশাসন এই বিষয়টির দিকে গুরুত্ব দিক, তা না হলে এই এলাকার শতাধিক কৃষক চরম সমস্যায় পড়বেন। এই বিষয়ে চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী জানিয়েছেন, দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।