দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ মার্চ: সোমবার (১৭ মার্চ) মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর। বুধবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অখণ্ড মেদিনীপুরের ‘ভূমিপুত্র’ অধ্যাপক দীপক কুমার কর। তবে, তাঁর প্রথম প্রবেশেই ছিল চমক, অভিনবত্ব! বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রবেশ করেন ঈশ্বরচন্দ্র প্রণীত ‘বর্ণপরিচয়’ হাতে। পুষ্পবৃষ্টি আর জয়ধ্বনির মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্যকে স্বাগত জানান পড়ুয়ারা। অধ্যাপক করের সাথে সাথেই জয়ধ্বনি ওঠে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর নামেও। বেলা ১২টা নাগাদ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রফেসর দীপক কুমার কর। তাঁকে বরণ করে নেন নিবন্ধক জয়ন্ত কিশোর নন্দী সহ ছাত্রছাত্রী ও অধ্যাপক-গবেষকরা।

‘বর্ণপরিচয়’ হাতে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ কেন? বুধবার সন্ধ্যায় অধ্যাপক কর জানান, “বর্ণপরিচয় আমাদের সকল বাঙালির শিক্ষার প্রারম্ভিক ভিত্তি। ‘বর্ণপরিচয়’ আমাদের শক্তি। আর সেই বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টার নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছি উপাচার্য হিসেবে। এ বড় গর্বের, আনন্দের। মনে হচ্ছিল যেন স্বয়ং বিদ্যাসাগর মশাই আমার সঙ্গেই আছেন। বর্ণপরিচয় হাতেই আমি আজ গোটা ক্যাম্পাস ঘুরেছি। তারপর দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।” তিনি জানাতে ভোলেননি, “আমিও তো অখণ্ড মেদিনীপুরেরই ছেলে। অধুনা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির সাতমাইলে আমার জন্ম। আমি বাসুদেবপুর হরিপ্রিয়া ইনস্টিটিউশনের ছাত্র। কলেজ স্তর থেকে কলকাতায় পড়াশোনা।” উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং পুরুলিয়ার সিধো কানো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক দীপক কুমার কর। এখনও তিনি কলেজ সার্ভিস কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তিনি বলেন, “আমি ইতিমধ্যেই উচ্চ শিক্ষা দপ্তরকে এই বিষয়ে জানিয়েছি। তবে, যতক্ষণ না অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, আমাকেই ওই দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।”
এদিন, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, গবেষক, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা ও শিক্ষাকর্মীদের সাথে মিলিত হয়ে এবং তাঁদের আন্তরিকতা ও অভ্যর্থনায় তিনি ‘আপ্লুত’ বলেও জানিয়েছেন অধ্যাপক কর। কোন কাজের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন? বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য বলেন, “এই তো সবে পৌঁছেছি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সব ঠিক করে ফেলব।” নবনিযুক্ত স্থায়ী উপাচার্যকে পেয়ে খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরাও। গবেষক প্রসেনজিৎ বেরা, বিবেক রায়, অরুনাভ দাস, সুসমন দণ্ডপাটরা বলেন, “দীর্ঘদিন পর স্থায়ী উপাচার্য পেয়েছে আমাদের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। স্যারকে আমরা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছি। স্যার যেভাবে ‘বর্ণপরিচয়’ হাতে প্রবেশ করেছেন, তাতে আমরা মুগ্ধ হয়ে যাই!”