দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ নভেম্বর: মধ্যরাতে রীতিমতো হুলুস্থুল কাণ্ড মেদিনীপুর শহরের নিমতলাচক এলাকায়! ঠিক স্পাইডারম্যানের মতোই এক যুবক লাফিয়ে বেড়াচ্ছিল লোকের বাড়ির এক ছাদ থেকে আরেক ছাদে। ভীত সন্ত্রস্ত স্থানীয়রা ভাবলেন নির্ঘাত চোর! ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল লোকজন। তারপরই এলাকার যুবকরা কোনভাবে ওই যুবককে নিচে নামিয়ে আনেন। তারপরই শুরু হয় বেদম প্রহার! মারের চোটে রক্তাক্ত হয় ওই যুবক। খবর পেয়েই পৌঁছয় কোতোয়ালী থানার টাউন বাবুর নেতৃত্বে পুলিশকর্মীরা। যুবককে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গিয়ে জানা যায়, কিছুক্ষণ আগেই ওই যুবক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তাঁর আত্মীয় এবং হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরাও তাঁকে রুখতে পারেননি! ঘটনাটি শুক্রবার (ঘড়ির কাঁটার হিসেবে শনিবার রাত্রি সাড়ে বারোটা-একটা) মধ্যরাতের।
শনিবার সকালে ওই যুবকের পরিবার সূত্রে জানা গেল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতনের (দাঁতন- ১ নং ব্লকের) আঙুয়া গ্রামের ওই যুবকের নাম নিগমানন্দ বারিক। ২৭ বছরের যুবক মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। চলছে চিকিৎসাও। এর মধ্যেই, গত বুধবার (২৪ নভেম্বর) বিষ খেয়ে ফেলে যুবক। ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে। ওই যুবক কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ভর্তি ছিল মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে। শুক্রবার গভীর রাতে ওই ওয়ার্ড থেকেই, পাশে থাকা নিজের আত্মীয়কে মেরে ধরে পালিয়ে যায় সে। ধরতে পারেননি নিরাপত্তাকর্মীরাও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও যখন পুলিশকে ফোন করার কথা ভাবছে, ঠিক সেই সময়ই রক্তাক্ত অবস্থায় যুবককে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনেন পুলিশকর্মীরাই। ঘটনায় নিঃসন্দেহে প্রশ্ন উঠেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “ঘটনাটি অনেক রাতে হয়েছিল! আর, সেই সময় নিরাপত্তাকর্মীরা চেষ্টা করেও মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবককে আটকাতে পারেননি। তাঁরাও খোঁজাখুঁজি করছিলেন। যাইহোক, কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ তাকে নিয়ে আসেন বলে জানতে পেরেছি। নিঃসন্দেহে অনভিপ্রেত ঘটনা। নিরাপত্তার বিষয়টি আরও জোরদার করা হবে।” জানা গেছে, ওই যুবককে আজকে সন্ধ্যা নাগাদ তাঁর বাড়ির লোকেরা বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, “মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে। খুব চিন্তায় আছি ওকে নিয়ে! দেখছি, যদি কোথাও আরও ভালো চিকিৎসা করানো যায়।”