দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: এবার খোদ সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব)’র গ্রাম মহিষদায় আঠারোটি পরিবারকে বয়কট করার হুঁশিয়ারি দিয়ে লিফলেট বিলির অভিযোগ উঠল! যে পোস্টারে উল্লেখ রয়েছে “মহিষদা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস” এর নাম। পোস্টারের বয়ান অনুযায়ী— “বুথ নম্বর ১৭৬, ১৭৯। পার্টির অনুমতি ছাড়া এই সমস্ত ব্যক্তিদের কোন জিনিসপত্র বিক্রয় করা যাবে না। চা দোকানদার দের উদ্দেশ্যে জানানো যায়, এই ব্যক্তিদের চা দেওয়া যাবে না।” এরপর, সেই পোস্টারে ১৮ জন বিজেপি ও সিপিআইএম নেতা-কর্মী-সমর্থকদের নাম দেওয়া রয়েছে। পাশাপাশি পোস্টারের শেষাংশে লেখা রয়েছে, “উপরোক্ত ব্যক্তিদের পার্টির (মহিষদা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস) অনুমতি ছাড়া যে দোকানদার সামগ্রী বিক্রয় করিবে, তাহাকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হইবে।”
এই ধরনের পোস্টারকে ঘিরেই বৃহস্পতিবার থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের “কুখ্যাত” কেশপুর রীতিমতো সরগরম! শুরু হয়েছে, রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তন্ময় ঘোষ জানান, “শুধু বয়কট নয়, কেশপুর বিধানসভা জুড়ে বিরোধীদের মারধর থেকে শুরু করে বাড়িছাড়া, বাড়িতে লুটপাট, গ্রামছাড়া করেছে তৃণমূল। ইতিহাস এদের কোনদিন ক্ষমা করবে না।” বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখার্জি বলেছেন, “মহিষদাতে বিরোধী দলের এর ১৮ জনকে সামাজিক বয়কট করা হয়েছে! অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। মধ্যযুগীয় বর্বরতার নিদর্শন।” সিপিআইএমের তরফেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছে, “দিব্যেন্দু মন্ডল সহ যে সকল নেতা-কর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা সকলের কাছেই জনপ্রিয় ও অজাতশত্রু। একদল নোংরা মানসিকতার ভুঁইফোড় তৃণমূল কর্মীরা এই ধরনের কাজ করেছে। আর এই দলে তো কারুর উপর নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ নেই!” যদিও বিজেপি ও সিপিআইএমের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ বলে জানিয়েছেন, কেশপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি উত্তমানন্দ ত্রিপাঠী। তিনি বলেন, “বিজেপি গোহারা হেরে যাওয়ার পর নতুন করে এলাকায় রাজনৈতিক অস্তিত্ব কায়েম করার জন্য তৃণমূলের নাম দিয়ে এইসব করে বেড়াচ্ছে।” তবে, কেশপুর বিধানসভার এই দুটি বুথেই (১৭৬ ও ১৭৯) বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল! তবে কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যই এই কাজ করা হয়েছে? অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে, এই ঘটনাকে বিরোধীদের অপপ্রচার ও চক্রান্ত বলেছেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে।