দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ অক্টোবর: প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেই সুদূর ঘটাল, দাসপুর, দাঁতন কিংবা কেশিয়াড়ি থেকেও শিক্ষক-শিক্ষিকারা পৌঁছে গেলেন বাসে, বাইকে কিংবা ছোট গাড়িতে করে। সকাল ১১টাতেই তিল ধরানোর জায়গা নেই জেলা শহর মেদিনীপুরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে। কে বলবে, দু’দিন আগেও আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে শিক্ষক-সমাজের একটা বড় অংশ শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাস্তায় নেমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন! পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অধীন মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এবং ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শনিবারের ‘বিজয়া সম্মিলনী’-তে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা যোগ দিয়েছিলেন এদিন। শিক্ষক নেতৃত্বদের আহ্বানে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদনীপুর জেলার প্রায় সমস্ত নেতা-মন্ত্রী-বিধায়করা। ছিলেন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত এবং শিউলি সাহা, বিধায়ক দীনেন রায়, অজিত মাইতি, মমতা ভুঁইয়া, সূর্যকান্ত অট্ট, উত্তরা সিংহ হাজরা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ প্রমুখ। সর্বোপরি উপস্থিত ছিলেন, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় হাজরা, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশিস হুদাইত, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান অনিমেষ দে এবং ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অভিজিৎ ধাড়া।
এদিনের এই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান থেকে শুধু মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব বা জনপ্রতিনিধিরাই নয়; ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিরাও মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় হাজরাকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান। খোদ প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা থেকে পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতিকেও বলতে শোনা যায়, “সুজয়কে রেকর্ড ভোটে জেতাতে হবে। এজন্য আপনাদের (শিক্ষকদের) যা করার, তা করতে হবে।” একসময় সুজয়ের সঙ্গে অজিতের ‘শীতল-সম্পর্ক’ নিয়ে জেলার রাজনীতিতে নানা জল্পনা তৈরী হয়েছে। এদিন সেই বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকেই বলতে শোনা যায়, “সুজয়কে আমাদের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুর বিধানসভার প্রার্থী করেছেন। ‘যোগ্য’ প্রার্থী হিসেবেই সুজয়ের নাম বিবেচিত হয়েছে। অন্তত ৩০-৪০ হাজার ভোটে এই আসন থেকে ও জিতবে। আপনাদের আহ্বান জানাব, ওর জন্য আপনারা প্রচার শুরু করুন।” অনুষ্ঠান চলাকালীনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন, “এই যেমন আপনারা ‘ডানা’ (দানা) ঝড় দেখলেন, ঠিক তেমনই বাংলা তথা ভারতবর্ষের রাজনীতিতে এখন মমতা ব্যানার্জির ঝড় উঠেছে! আমরা ছ’টি বিধানসভা উপনির্বাচনেই জিতব। মেদিনীপুর থেকে সুজয় রেকর্ড ভোটে জিতবে। ও মানুষের নেতা। সমাজের নেতা। নিজে ৫-৬টা নির্বাচন করিয়েছে। আমি তো আগেই বলেছি, সুজয় মানে সিওর জয়!”
যদিও, মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে শিক্ষকদের শৃঙ্খলা নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন ও সেচ দপ্তরের মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া। শিক্ষকদের জন্য এদিন দুপুরের খাবারের (লাঞ্চের) ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বেলা ১টার পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেই দিকে (খাবারের জায়গার দিকে) রওনা দেওয়া শুরু করেন। প্রায় দেড়টা নাগাদ মাইক হাতে নেন মন্ত্রী মানস। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চেয়ার ছেড়ে উঠে যাওয়া দেখে ক্ষুব্ধ হন তিনি! বলেন, “এই শৃঙ্খলা নিয়ে ছেলেমেয়েদের কি শেখাবেন আপনারা?” কটাক্ষ করেন, “নির্বাচন করাতে গিয়েও কি সব ছেড়ে দিয়ে খেতে চলে যাবেন অপনারা? আমি কিন্তু খুব অসন্তুষ্ট!” মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভপতি তথা DPSC-র নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান অনিমেষ দে-কেও এ নিয়ে ‘প্রশ্ন’ করেন তিনি। বলেন, “পুরো জেলাকে নিয়ে এই ধরনের একটা অনুষ্ঠান। কিন্তু, এটা ঠিক নয়!” যদিও, পরে অবশ্য শিক্ষকদের উপস্থিতি এবং আয়োজন নিয়ে প্রশংসা শোনা যায় তাঁর গলায়। অনুষ্ঠানের মাঝপথে তো রীতিমত আপ্লুত-কন্ঠেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সাংবাদিকদের শুনিয়েছেন, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের নেতৃত্বে এবং প্রাইমারি কাউন্সিলের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে ঐতিহাসিক প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে আমরা এই মিলন অনুষ্ঠানের সূচনা করলাম। এবার দেখতে থাকুন। শুধু দেখতে থাকুন!”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…