দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ মার্চ: শনিবার দুপুরে পাশের গ্রামে নিমন্ত্রণ বাড়ি খেতে গিয়েছিল। তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিল বছর ২২’র যুবক। গতকাল অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় পরিবারের তরফে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। আজ, সোমবার সাত সকালেই পাশের ওই গ্রামের একটি পুকুরেই মৃতদেহ ভেসে ওঠে যুবকের! ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের বীরসিংহপুর গ্রামের। মৃত যুবকের নাম সুকুর আলী (২২)। তার বাড়ি সদর ব্লকের বনপুরা অযোধ্যা নগরে। পরিবারের দাবি, সুকুর-কে খুন করে পায়ে পাথর বেঁধে, পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল! অভিযোগ, বীরসিংহপুর গ্রামেরই এক গৃহবধূ-র সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত বা পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত ছিল সুকুর। নিজেদের ‘সংসার’ বাঁচাতে, ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীই সুকুর-কে খুন করেছেন! মহিলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন যুবকের পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য যে, সোমবার (১১ মার্চ) সকালে বীরসিংহপুর গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামেরই একটি পুকুরে এক যুবকের দেহ ভাসতে দেখেন। এরপরই তাঁরা মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোতোয়ালী থানার পুলিশ। তবে, পাশাপাশি অবস্থিত ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদেরই দাবি, পরকীয়া’র কারণেই খুন হতে হয়েছে যুবককে। যুবকের আত্মীয়রা ক্যামেরার সামনে স্পষ্টতই জানিয়েছেন, বীরসিংহপুর গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুকুরের। মহিলার দু’টি সন্তানও আছে। ঘটনার পর থেকেই ওই মহিলা সহ তাঁর স্বামী পলাতক বলে দাবি গ্রামবাসী ও যুবকের আত্মীয়দের। তাঁরা এও দাবি করেছেন, ওই মহিলার বাড়ির সামনে থেকে সুকুরের জুতো উদ্ধার হয়েছে। এমনকি বাড়ির সামনের উঠোনে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে বলেও দাবি তাঁদের। তদন্তের কারণে পুলিশ ওই বাড়িতে তালা দিয়েছে বলেও বীরসিংহপুর গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বীরসিংহপুর গ্রামে একটি নিমন্ত্রণ বাড়ি খেতে গিয়েছিল সুকুর। তারপর থেকেই আর বাড়ি ফেরেনি। শনিবার বিকেলের পর থেকে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি বলেও জানা গেছে। এরপরই রবিবার সন্ধ্যায় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিবারের লোকজন। সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ বীরসিংহপুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে দেহ উদ্ধার হয়। যুবকের পায়ে পাথর বাঁধা ছিল এবং নাকে রক্তের দাগ ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। যুবকের প্যান্টের পকেট থেকে তার বন্ধ থাকা মোবাইলটিও উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্রের দাবি, বীরসিংহপুর গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে যুবকের সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকেই স্বামীর সঙ্গে ওই মহিলার অশান্তি হচ্ছিল বলে দাবি। তবে কি নিজেদের সম্পর্ক বাঁচাতে, স্বামীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে যুবককে খুন করার নেপথ্যে রয়েছেন ওই মহিলাই? সুকুরের আত্মীয়দের অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করে সুকুরকে নিজেদের বাড়িতে ডেকে খুন করেছেন ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীই! তারপর পুকুরে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়েছে। তাঁরা মহিলা ও তাঁর স্বামীর ফাঁসির দাবি তুলেছেন! যদিও, এই বিষয়ে পুলিশের তরফে এখনও অবধি কোন বিবৃতি মেলেনি। শুধুমাত্র জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত তাঁরা শুরু করেছেন এবং তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।