দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২৪ আগস্ট: হাওড়ার শালিমার GRP থানার লকআপ ভেঙে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যাওয়া দুই খুনি যুবককে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রেলশহর খড়্গপুরের মালঞ্চা এলাকা থেকে পাকড়াও করে বড়সড় সাফল্য অর্জন করলো খড়্গপুর জিআরপি বাহিনী। জানা যায়, গত ১৭ আগস্ট, বুধবার বিকেলে ৩ টা-সাড়ে ৩ টা নাগাদ হাওড়া সংলগ্ন আবাদা স্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে ১৭ বছর বয়সী শুভম হরি-কে ঠেলে ফেলে দিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে তারই দুই বন্ধু বছর ২২’র রাজু হরি এবং বছর ১৮’র সামিরুল মোল্লা’র বিরুদ্ধে! দ্রুত রেল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন ওই যুবককে। ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ১৮ আগস্ট, বৃহস্পতিবার, বিকেলে শালিমার GRP থানায় ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন শুভমের বাবা কৃষ্ণ হরি। এরপরই, উলুবেড়িয়া বাজার পাড়ার বাসিন্দা দুই যুবককে গ্রেফতার করে শালিমার জিআরপি’র পুলিশ। হাওড়া আদালতে তোলা হলে দু’জনেরই ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। জিআরপি’র লকাপে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিল পুলিশ। কিন্তু, শনিবার মাঝরাতে বা রবিবার ভোররাতে দুই আসামী শালিমার GRPS’র জরাজীর্ণ লকাপ ভেঙে পালিয়ে যায়! রবিবার সকাল থেকে হুলুস্থুল পড়ে যায়। নিরাপত্তার চরম গাফিলতির অভিযোগ ওঠে শালিমার GRP থানার পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। এরপরই, তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। অবশেষে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ খড়্গপুর জিআরপি’র ডিএসপি চন্দ্র শেখর দাসের নেতৃত্বে খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ থেকে ওই দুই লকআপ ভাঙা খুনি যুবককে পাকড়াও করা হয়। আজ, বুধবার (২৪ আগস্ট) তাদের শালিমার জিআরপি’র হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খুন হওয়া যুবক শুভম হরি এবং অভিযুক্ত দুই যুবক রাজু হরি ও সামিরুল মোল্লা পরস্পর বন্ধু ছিল বলে জানা গেছে। তিনজনেরই বাড়ি উলুবেড়িয়া থানার উলুবেড়িয়া বাজার পাড়া এলাকায়। গত ১৭ আগস্ট (বুধবার), তারা একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বলে জানিয়েছেন শুভমের বাবা কৃষ্ণ হরি। তারপর-ই বিকেল ৩টা-সাড়ে ৩টা নাগাদ আবাদা স্টেশন থেকে শুভমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে জিআরপি। নিয়ে যাওয়া হয় উলুবেড়িয়া হাসপাতালে। কিন্তু, চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাজু আর সামিরুলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন কৃষ্ণ হরি। ১৮ আগস্ট তাদের গ্রেফতার করা হয় এবং ১৯ আগস্ট আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যেই, থানার লকআপ ভেঙে পালিয়ে যায় তারা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, শালিমার জিআরপি’র লকআপটি বেশ পুরানো দিনের। ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণও হয়েতো সেভাবে হয়নি বহুদিন। এদিকে, কোনও সিসিটিভির নজরদারিও ছিল না। নজরদারির অভাব আর প্রহরার অভাবে সেই লকআপ ভেঙেই পালিয়ে যায় রাজু ও সমিরুল। কারণ, তালা যেমন ছিল তেমনই অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এরপরই, চিরুনি তল্লাশি শুরু করে জিআরপি বাহিনী। অবশেষে, ডিএসপি চন্দ্র শেখর দাসের নেতৃত্বে খড়্গপুরের মালঞ্চা থেকে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তাদের শালিমারে পাঠানো হবে এবং পুনরায় হাওড়া আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে।