দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৭ এপ্রিল: কয়লা বোঝাই মালগাড়ি নিয়ে যেতে হবে আসাম! এই দাবি তুলে ট্রেনের গার্ডের গলায় ছুরি বসিয়ে মালবাহী ট্রেন তিন ঘন্টা আটকে রাখল বছর ৩৫’র যুবক! রবিবার গভীর রাতে হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর স্টেশনে। শেষ পর্যন্ত ট্রেনের গার্ডকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে রেল পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। রেল পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়লা ভর্তি মালগাড়ি বা মালবাহী ট্রেন আসাম নিয়ে যাওয়ার দাবি তুলে রবিবার রাত্রি দেড়টা নাগাদ (ঘড়ির কাঁটার হিসেবে সোমবার, ১৭ এপ্রিল) ফারুক মিয়া নামে জলপাইগুড়ির বছর ৩৫’র যুবক হামলা চালায় ওই ট্রেনের গার্ডের উপর। দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর স্টেশনে তিন নম্বর প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ওই মালবাহী ট্রেনের গার্ডের রুমে প্রবেশ করে গার্ড জনক সাহু-কে ছুরি দেখিয়ে প্রায় তিন ঘন্টা আটকে রাখে যুবক। কিছুক্ষণের মধ্যে খড়গপুর স্টেশনের কর্তব্যরত জিআরপি-রা সেই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সাথে সাথেই খবর দেওয়া হয় জিআরপি থানায় ও আরপিএফ-দের। ছুটে যায় জিআরপি এবং আরপিএফ। কিন্তু, ফারুক মিয়া ওই গার্ডকে ভিতরে আটকে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। এমনকি, গার্ডের গলায় গামছা জড়িয়ে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে! সেই সময়ই গার্ডের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিতে এবং জিআরপি সহ রেল পুলিশের তৎপরতায় ট্রেনের দরজা ঠেলে বেরিয়ে আসেন গার্ড। তাঁকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ফারুক মিয়া-কে জিআরপি আটক করে। পরে নির্দিষ্ট মামলা রুজু করে গ্রেফতার করা হয় মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবককে।

thebengalpost.net
এই সেই ছুরি:

জানা গেছে, মালগাড়ির গার্ড জনক সাহু কয়লা বোঝাই মালগাড়িটি ভদ্রক থেকে খড়্গপুর হয়ে মেছেদা নিয়ে যাচ্ছিলেন। খড়্গপুর স্টেশনে মালগাড়ি কিছুক্ষণের জন্য জন্য দাঁড়ায়। সেই সময় মাল গাড়ির গার্ড তাঁর রুমে (মালবাহী ট্রেনের গার্ড রুমে) বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখনই হঠাৎ করে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ফারুক মিয়া নামে ওই যুবক গার্ডের রুমে ঢুকে গিয়ে গার্ডকে ছুরি দেখিয়ে আসামে ট্রেন নিয়ে যেতে বলে এবং ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তিন ঘণ্টার প্রচেষ্টায় গার্ডকে উদ্ধার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় ছুরিটি এবং ফারুককে আটক করে রেল পুলিশ। পরে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রেল সূত্রে জানা গেছে, জলপাইগুড়ির ফলাকাটার বাসিন্দা ওই যুবক এক সময়ে জলপাইগুড়ির একটি চা বাগানের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। পরে, বেঙ্গালুরুতে যায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে। সম্ভবত সেখানেই মানসিক ভারসাম্য হারায় ফারুক। দিন কয়েক আগে, বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরার পথে খড়্গপুর স্টেশনে নেমে পড়ে বলে জানা যায়। ভবঘুরের মতো ঘুরছিল কয়েকদিন! তার মধ্যেই এই কান্ড ঘটায় সে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।