তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ এপ্রিল: ভারতের জাতীয় জলজ প্রাণী (India’s National Aquatic Animal) হল- গাঙ্গেয় ডলফিন বা গাঙ্গেয় শুশুক (Ganges River Dolphin)। গঙ্গা নদীর ডলফিন বা শুশুক ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালের মিষ্টি জলে বা স্বাদু জলে বাস করা ডলফিনের একটি প্রজাতি। এই ডলফিন বা শুশুক প্রজাতি প্রাথমিকভাবে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী এবং বাংলাদেশ ও নেপালে প্রবাহিত তাদের শাখা নদীগুলোতে দেখা যায়। এই শুশুক বা ডলফিন South Asian River Dolphin নামেও পরিচিত। এবার, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ নং ব্লকের সীতাকুণ্ড গ্রামে শিলাবতী নদী থেকে একটি বিশালাকায় গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুক উদ্ধার করল বনদপ্তর। মহকুমা প্রশাসনের সহযোগিতায় পুলিশ ও বনদপ্তর যৌথভাবে এই শুশুক বা ডলফিন-টিকে গত শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) উদ্ধার করে রূপনারায়ণ নদীর গভীর জলে সুস্থ অবস্থায় ছেড়েছেন। শিলাবতী নদীর অল্প জলে বেশ কিছুদিন ধরেই ডলফিন-টি ছটফট করছিল। তারপরই এই উদ্যোগ নেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। ভারতের জাতীয় জলজ প্রাণীটির সংখ্যা এমনিতেই দিন দিন কমছে। সেই পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসন ও বনদপ্তরের এই উদ্যোগকে বাহবা দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা। যদিও, বন্যপ্রাণী গবেষক ও পরিবেশবিদ রাকেশ সিংহ দেব বলেন, “ডলফিনটির আকার-আয়তন দেখে মনে হয়েছে এটি ইরাবতী ডলফিন ( Irrawaddy Dolphin/ Orcaella brevirostris)। গাঙ্গেয় শুশুক বা গঙ্গা নদীর ডলফিন আকারে একটু ছোট হয়। ইরাবতী ডলফিন ঈষৎ নোনাজলে থাকে। আকারে একটু বড় হয়। তবে, দুই প্রজাতিই মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় দেখা যায়।”

thebengalpost.net
উদ্ধার গাঙ্গেয় ডলফিন:

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে শিলাবতী নদীতে আটকে থাকা ডলফিনটিকে বনদপ্তর ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় জাল দিয়ে উদ্ধার করা হয়। তারপর, রূপনারায়ণ নদীতে ছাড়া হয়। জানা যায়, দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের সীতাকুণ্ড গ্রামে শিলাবতী নদীতে গ্রামের বাসিন্দারা কয়েক দিন আগে দেখতে পান একটি ডলফিন। খবর ছড়িয়ে পড়তেই ডলফিন দেখতে ভিড় জমান এলাকার মানুষজন। খবর পৌঁছে যায় প্রশাসনের কাছেও। অবশেষে, মহকুমা পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্যোগে এবং বনদপ্তরের সক্রিয় প্রচেষ্টায় ডলফিন-টিকে বেশ কষ্ট করে শিলাবতী নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। বনদপ্তর সূত্রে খবর, প্রায় ৮ ফুট লম্বা এবং ১ কুইন্টাল ৪০ কেজি ওজনের ডলফিনটি জোয়ারের সময় হয়তো দাসপুরের এই শিলাবতী নদীতে চলে এসেছিল। আর তারপরই, শিলাবতী নদীর অল্প জলে তার কষ্ট শুরু হয়। অবশেষে তাকে সুস্থ অবস্থায় রূপনারায়ণ নদীতে ছাড়তে পেরে খুশি মহকুমা পুলিশ-প্রশাসন এবং বনদপ্তর।