দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ৮ আগস্ট: পাম অ্যাভিনিউ-র দু’কামরা ফ্ল্যাট থেকে শেষবারের জন্য বেরোলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য! জনস্রোতে ভেসে তাঁর ‘শ্বেতশুভ্র’ নশ্বর দেহ রওনা দিল পিস ওয়ার্ল্ডের পথে। শববাহী শকটের সঙ্গী হল দুধসাদা ‘প্রিয়’ অ্যাম্বাসেডরও। যার নম্বর WB-06-0002। মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী- শেষ দিন পর্যন্ত এই অ্যাম্বাসেডরে করেই রাইটার্স থেকে আলিমুদ্দিন কিংবা যে কোন সভা সমাবেশে রওনা হতেন বুদ্ধদেব। অসুস্থ বুদ্ধদেব হাসপাতালে যতবার ভর্তি হয়েছেন, সেখানেও গিয়েছে তাঁর প্রিয় অ্যাম্বাসেডর। শেষ যাত্রাতেও সঙ্গী হল সে!
এদিন আকাশ যখন মেঘলা। কমরেডদের মুখরিত স্লোগানের মাঝেও আশ্চর্য এক নিস্তব্ধতা যখন বিরাজ করছে পাম অ্যাভিনিউ-র বাইরে। সেই সময়ই কেঁদে ভাসালেন বুদ্ধবাবুর WB-06-0002 অ্যাম্বাসেডরের ‘সারথি’ সত্য ঘোষ, সমর বিশ্বাস, সেক ওসমানরা। ৯১ সাল থেকে বুদ্ধবাবুকে দেখে আসছেন সত্য ঘোষ। এদিন আর কথা বলতে পারলেন না। বললেন, “খারাপ লাগছে…!” কেঁদে ফেলেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। নিজেকে কিছুটা সামনে আরেক চালক সমর বিশ্বাস বলেন, “বুদ্ধবাবু সকাল ১০টা ০১-এ বার হব বললে, তখনই বেরোতেন। কোনও দিন অন্যথা হয়নি! অনেক স্মৃতি। এখন আর কিছু বলব না!” বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গাড়ির আরেক চালক ওসমানও এদিন পুরানো কথায় ডুবে রয়েছেন। একবার বুদ্ধদেববাবু রিজাইন করলে এই ওসমানও রিজাইন করেন৷ বলেছিলেন, “বুদ্ধবাবু না থাকলে, আমিও থাকব না”। জানান তাঁর ছেলে।
আগামীকাল (শুক্রবার), পিস ওয়ার্ল্ড থেকে বিধানসভার উদ্দেশ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মরদেহ রওনা দেবে সকাল ১০টা ৩০মিনিটে। বিধানসভা ভবনে সকাল ১১-১১.৩০ মিনিট পর্যন্ত শায়িত থাকবে দেহ। এরপর, মুজফফর আহমেদ ভবনে দুপুর ১২-৩.১৫ মিনিট এবং দীনেশ মজুমদার ভবনে ৩.৩০-৩.৪৫ মিনিট পর্যন্ত দেহ রাখা হবে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে দীনেশ মজুমদার ভবন থেকে দেহদানের জন্য নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ‘শেষযাত্রা’ পাড়ি দেবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দেহদানের সময় নির্ধারিত হয়েছে বিকাল ৪টে। উল্লেখ্য, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পূর্বসূরী জ্যোতি বসু’র দেহদান সম্পন্ন হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে।