দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২১ জুলাই:তৃণমূলের শহিদ দিবস ঘিরে একদিকে যখন চরম ব্যস্ততা, তার মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির সামনে ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর ঘটনা! শুক্রবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় এক সন্দেহভাজনকে। সামনে ‘পুলিশ’ স্টিকার দেওয়া একটি কালো গাড়িতে (প্রাইভেট কারে) ছিলেন ওই যুবক। পুলিশের সন্দেহ হওয়ায়, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই ওই যুবক অসংলগ্ন নানা কথা বলতে শুরু করেন। কিন্তু, সবচেয়ে মারাত্মক বিষয় হল, ওই গাড়িতে তল্লাশি চালাতেই মেলে ছুরি, ভোজালি, মাদক এবং একাধিক ভুয়ো আই কার্ড। নিজেকে ‘পুলিশ কর্মী’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু, দেখা যায় তাঁর পরিচয়পত্রটি ভুয়ো। এরপরই তাঁকে আটক করা হয় বলে খবর। জানা গিয়েছে, কালীঘাট থেকে আটক ব্যক্তির নাম শেখ নুর আমিন। সন্দেহভাজন ওই যুবক পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এও জানা গেছে, ওই যুবক জেলা শহর মেদিনীপুরের অলিগঞ্জ কসাইপাড়ার বাসিন্দা। তবে, কি কারণে এই বিশেষ দিনে ওই যুবক এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ধৃত মেদিনীপুর শহরের যুবকের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ভোজালি, মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে। যুবককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে পুলিশ, বিএসএফ সহ একাধিক ভুয়ো পরিচয়পত্র মিলেছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। প্রসঙ্গত, গত বছর এই জুলাই মাসেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চত্বরে লুকিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তিকে আটক করে নিরাপত্তারক্ষীরা তুলে দিয়েছিলেন কালীঘাট থানার পুলিশের হাতে। ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশপাশে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। গত বছর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অনুপ্রবেশের ঘটনায় অভিযুক্ত হাফিজুল মোল্লা নামে ওই যুবককে দোষী সাব্যস্তও করে আদালত। ২০২২ সালের জুলাই মাসে রাতের অন্ধকারে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চত্বরে ঢুকে পড়েছিলেন হাফিজুল। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কনফারেন্স হলের পিছনের দিকে রাতভর ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। হাতে ছিল একটি রড জাতীয় বস্তু। পরে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যান হাফিজুল। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা বলয় এড়িয়ে ঢুকে পড়া সেই হাফিজুলকে সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত করে আলিপুর আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫৮ ধারায় (আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়ে অন্যায়ভাবে রাতের বেলা বাড়িতে ঢুকে পড়া) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাঁকে। আদালত হাফিজুলের ১ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছে।