দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ নভেম্বর: চন্দন মাইতির পর ভাস্কর বেরা। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন! এ নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। আর, এর মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায় মৃত বিজেপি কর্মী ভাস্কর বেরা’র মরদেহে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানোর পর, মেদিনীপুর শহরে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনি বললেন, “পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত বাংলার মেয়ের রাজ্যে মরেও শান্তি নেই! পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঠানো হয়েছে। ১৩ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছে, আজ ১৫ নভেম্বর। মৃতদেহ নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয়েছে! পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও, কাঁথি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়নি, রিপোর্ট বদলাতে পারবেন না বলে। তাই, আগে থেকেই সেটিং করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে। এখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগে থেকেই ফোন করে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা হবে, পাকস্থলীতে মদ পাওয়া গেছে, দেহে আঘাতের চিহ্ন নেই!”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর রাতে ভগবানপুরের খাটিয়া গ্রামের বিজেপি বুথ সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর বেরা’র অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। তবে, তাঁর ময়নাতদন্ত কাঁথি বা তমলুক জেলা হাসপাতালে না করে, সুদূর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে করায়, বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এনিয়েই, রাজ্য সরকার তথা শাসক দলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এও বলেছেন, “চন্দন মাইতি ও ভাস্কর বেরা’র মৃত্যুর বিষয়ে সিবিআই (CBI) এর কাছে অভিযোগ জানানো হবে। প্রয়োজনে আদালতের সাহায্য নিয়ে হলেও, এই দুই খুনের সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হবে।” তবে, এদিন নন্দীগ্রাম মামলা প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী কিছু বলতে চাননি। তিনি মন্তব্য করেছেন, “বিচারাধীন বিষয়ে বিশেষ কিছু বলবনা, তবে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা আছে। আর, একথা তো সত্যিই যে, হাইকোর্টের উপর মাননীয়া চাপ সৃষ্টি করেন। বিচারপতি কৌশিক চন্দের ঘটনায় তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওনাকে এর আগে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে আদালত!” এদিকে, শুভেন্দুর এদিনের মন্তব্যের পাল্টা বিরোধিতা করে, তাঁকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। তিনি বলেছেন, “নন্দীগ্রাম মামলায় চাপে পড়ে গিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। উনি বুঝে গেছেন, ওনার বিধায়ক তকমা বা বিরোধী দলনেতার তকমা আর থাকবে না! রাতের অন্ধকারে যেভাবে চাপ সৃষ্টি করে, নন্দীগ্রামের ফলাফল বদলে দিয়েছিলেন, তা ওনার পক্ষেই সম্ভব! এবারও, কাঁথি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারতেন উনিই, তাই ময়নাতদন্ত করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। আর, একথা সকলেই জানে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বদলে দেওয়ার অভিযোগ নেই।”