দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ আগস্ট: বস্তুত বাংলায় কোনও অস্তিত্ব-ই নেই, বছর দশেক আগেও একবার মাথা গলানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল! সেই আম আদমি পার্টি (AAP) ‘র পোস্টারে ছেয়ে গেল জেলা শহর মেদিনীপুর। সূত্রের খবর অনুযায়ী, শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয় গত কয়েকদিনের বাংলার বিভিন্ন শহরেই নাকি আপেরা পোস্টার সাঁটিয়েছে- “নোংরা রাজনীতি করতে সাফ, বাংলায় এবার আসছে আপ”! কিন্তু, বঙ্গবাসী বা মেদিনীপুর বাসী কি তাতে সাড়া দেবে। বাঙালি প্রতিষ্ঠাতা হলেও, হিন্দি বলয়ের পার্টি হিসেবে যেখানে বিজেপি-র কাছেই ‘বাংলার মসনদ’ অধরা থেকে গেল, সেখানে ‘আপ’ এর এই বার্তা কি আদৌও কোনো প্রভাব ফেলবে? নাকি আপ-কে সামনে রেখে বিজেপি-বিরোধীদেরই নতুন কোনো “খেলা”? এ নিয়েই বুধবার দিনভর জল্পনা ছড়ালো মেদিনীপুর শহরে।
বুধবার হঠাৎ করেই মেদিনীপুর শহর জুড়ে দেখা গিয়েছে আপের পোস্টার। একই সঙ্গে বিজেপি-র কায়দায় “মিসড কল” দিয়ে আপের সদস্য হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে! উল্লেখ্য যে, প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে খড়গপুর আইআইটি (IIT Kharagpur) এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়া ছিলেন বর্তমান আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেই “শিকড়”কে আঁকড়ে ধরেই কি জঙ্গলমহলের মাটিতে আপাতত কুঁড়ি ফোটানোর কৌশল নিয়েছে আপ? এই প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও আপ নেতাদের দাবি, গোটা রাজ্য জুড়েই চলছে তাঁদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান। আপের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অধ্যক্ষ সৌরভ ঘোষ। তিনি আবার পেশায় ইঞ্জিনিয়ারও। সৌরভের বক্তব্য, “দলের ‘বাংলা নির্মাণ অভিযান’ চলছে। সেই লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে পোস্টার দেওয়া শুরু হয়েছে। মেদিনীপুর শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার করা হচ্ছে। সংগঠন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে সদস্য সংগ্রহের মধ্য দিয়ে।” সৌরভের এও দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ইতিমধ্যেই ৫০০ সদস্য রয়েছে আপের। পোস্টারে দেওয়া নম্বর দেখে অনেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও জানিয়েছেন আপ নেতারা। বুধবার মেদিনীপুর শহরের স্টেশন রোড-সহ কয়েকটি এলাকায় দেখতে পাওয়া যায় আপের পোস্টার। তাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং দলীয় প্রতীক ছাপা। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বরও। পাশাপাশি বার্তা, মিসড কল দিয়ে আপের সদস্য হওয়ার। তবে, আপের এই কর্মকাণ্ড-কে বিজেপি বিরোধীদেরই ‘চক্রান্ত’ বলতে চাইছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির মেদিনীপুর জেলা সহ সভাপতি অরূপ দাসের প্রশ্ন, “এখানে ওই রাজনৈতিক দলের কোনও সমর্থন আছে কি? বিজেপি বিরোধিতা করা ছাড়া ওদের আর কোন কাজ নেই!” অপরদিকে, জোড়াফুল শিবিরের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলছেন, “যদি কোনও রাজনৈতিক দল মিসড কল দিয়ে তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চায় তাতে তৃণমূলের কিছু বলার নেই।” রাজ্যে ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক উদ্যোগের কথা তুলে ধরে সুজয় বলছেন, “এর আগেও দেখেছি বিজেপি মিসড কল দিয়ে সদস্য সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু এখন ক’জন বিজেপি করেন? আর আপ নিয়েও আমাদের মাথাব্যথা নেই!”