দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ২৪ জুন: পর পর দুই বছর। অতিমারীতে অনাড়ম্বর ভাবেই পালিত হলো জগন্নাথ দেবের ‘স্নানযাত্রা’ উৎসব। ওড়িশার পুরী থেকে মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির সর্বত্র মেনে চলা হলো কোভিড বিধি। মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির এলাকার অবস্থিত প্রভু জগন্নাথ মন্দিরে, ভক্তদের অনুপস্থিতিতে ৭ টি কলসে করে (৭ সমুদ্রের প্রতীকী) জল নিয়ে এসে মন্দিরের পুরোহিতরা স্নান করালেন জগন্নাথ দেব, বলরাম দেব ও মাতা সুভদ্রা’কে। পুরী থেকে মাহেশ সর্বত্র অনাড়ম্বর ভাবেই পালিত হলো এই ‘স্নানযাত্রা’ উৎসব। রীতি মেনে প্রভু জগন্নাথ এবার জ্বরে কাবু হয়ে বিশ্রামে যাবেন! আগামী ১২ ই জুলাই রথযাত্রার দিন ফের ভক্তদের সম্মুখে আবির্ভূত হবেন।
প্রসঙ্গত, স্নানযাত্রা হল হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে আয়োজিত একটি উৎসব। হিন্দু দেবতা জগন্নাথের ভক্তদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনটিকে জগন্নাথের জন্মতিথি মনে করা হয়। পুরীতে স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদনমোহন বিগ্রহকে জগন্নাথ মন্দির থেকে স্নানবেদীতে বের করে আনা হয়। সেখানে তাদের প্রথাগতভাবে স্নান করানো হয় এবং ভক্তদের দর্শনের জন্য সুন্দর বেশভূষায় সজ্জিত করা হয়। কথিত আছে, জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্বয়ম্ভু মনুর যজ্ঞের প্রভাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন প্রভু জগন্নাথ। তারপর এই পূণ্যতিথিটিকে জগন্নাথদেবের জন্মদিন হিসেবে পালন করার নির্দেশ দেন মনু। সেই জন্মদিন উপলক্ষে পৌরাণিক কাল থেকে এই বিশেষ স্নান উৎসব পালিত হয়ে আসছে আজও। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম পূর্ণিমাতেই জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার আয়োজন করা হয়। এদিন গর্ভগৃহ থেকে মূর্তি তুলে এনে স্নান মণ্ডপে স্থাপন করা হয়। সেখানেই সুগন্ধি জল দিয়ে স্নান করানো হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে। স্নানের পাশাপাশি চলে মূর্তির সাজসজ্জা-অলঙ্করণ ইত্যাদি। ১০৮ ঘড়া জলে স্নানের পরেই জ্বরে কাবু হয়ে পড়েন জগন্নাথদেব। তাই এইসময় গৃহবন্দি অবস্থায় থাকেন। রথ পর্যন্ত বিশ্রাম নেন। তাই ভক্তরা জগন্নাথ দেবের দর্শন পান না। এই কয়েকদিন পুজোও হয় না তাঁর। রীতিমতো কম্বল চাপা দিয়ে পড়ে থাকেন জগতের নাথ। তবে রথযাত্রার দিন রাজবেশে রথে করে তিনি যাবেন মাসির বাড়িতে। এ বার তা সম্পন্ন হবে ১২ জুলাই।