মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ সেপ্টেম্বর: জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ স্থানে শেষ করলেন মজিদা খাতুন (Majida Khatun)। থাইল্যান্ড থেকে বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঘরে ফিরতেই উচ্ছ্বাসে মাতলো খড়্গপুর! ‘বিজয়িনী’র সম্মান দিয়েই বরণ করে নেওয়া হল, পশ্চিম মেদিনীপুরের এই ‘বিস্ময় কন্যা’-কে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‘আর্টিস্টিক জিমন্যাস্ট’ প্রণতি নায়েকের পর ‘অ্যারোবিক জিমন্যাস্ট’ মজিদা খাতুন-কে ঘিরেই নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে বাংলা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর। জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ফাইনালে উঠেও, অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয়েছে মজিদা’র। তবে, এখনই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়নি! মাত্র ১৫ বছর বয়সে, চরম দারিদ্র্য আর প্রতিবন্ধকতা জয় করে ‘সপ্তম এশিয়ান অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ’ (7th Aerobic Gymnastics Asian Championships)- এর মূলপর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন খড়্গপুর পৌরসভার ২৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মজিদা খাতুন। পৌরসভা, প্রশাসন, বণিক সভার সাহায্য নিয়ে পৌঁছেছিলেন থাইল্যান্ডে। প্রয়োজন ছিল বিশেষ এক ধরনের জুতো’র। নতুন জুতো কেনার সামর্থ্য-ও ছিলোনা, তাই কোচ রঞ্জিত দাস চৌধুরী’র তৎপরতায় একজোড়া ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ জুতো কেনা সম্ভব হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে সেই জুতোও সেলাই করতে হয়েছিল! এমনই নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা জয় করে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে নেমেছিলেন মজিদা। ছেঁড়া জুতো পরেই ‘এশিয়ান অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ’ এর ফাইনালেও উঠেছিলেন! শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ স্থানেই থামতে হল মজিদা-কে।
বাংলার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবেই থাইল্যান্ডে আয়োজিত (৩-৫ সেপ্টেম্বর) ‘সপ্তম অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্স এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ’ এ অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মজিদা খাতুন। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য মাত্র কয়েক ঘন্টাও সুযোগ পাননি হয়তো, দেশবাসীকে চমকে দিয়ে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর)-ই এশিয়ার একাধিক প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ফাইনালেও পৌঁছে গিয়েছিলেন। স্কোর হয়েছিল ১৬.০৫। তবে, ফাইনালে নিজের সেরা টুকু দিয়েও পদক আনতে ব্যর্থ হয়েছেন মজিদা! ১৬.৪৪ স্কোর নিয়ে ফাইনালে ষষ্ঠ স্থানে শেষ করতে হয়েছে তাঁকে। তবে, হাজারো প্রতিবন্ধকতা জয় করে মজিদা যে পারফরম্যান্স তুলে ধরতে পেরেছেন, তাতে খুশি ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন (Gymnastics Federation of India)। খড়্গপুর সাউথ সাইড গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মজিদা খাতুনের এই সাফল্য বা কৃতিত্বের পেছনে যাঁর অবদান সর্বাধিক, সেই কোচ রঞ্জিত দাস চৌধুরী বুধবার জানিয়েছেন, “পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। ওখানে যে উডেন ফ্লোরে, বিশেষ ম্যাটের উপর পারফরম্যান্স করতে হয়েছে; মজিদা’র কাছে প্রথম! একধরনের বিশেষ জুতোর প্রয়োজন ছিল। তা আমাদের ছিলোনা। শেষ মুহূর্তে সেকেন্ড হ্যান্ড জুতো কেনা হয়েছিল। তাও আবার সেলাই করে নিতে হয়েছিল। ওই জুতো পরে দরিদ্র পরিবারের মজিদা প্রথমবার পারফরম্যান্স করতে নেমেছিল। নিজের দক্ষতা সম্পূর্ণভাবে মেলে ধরতে পারছিলোনা! তা সত্ত্বেও ফাইনালে অর্থাৎ প্রথম ৬ জনের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিল। ফাইনালে স্কোর সামান্য বাড়ালেও, প্রথম তিন জনের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারেনি! তবে, আমরা খুশি। ও যেভাবে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা জয় করে এই পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তা প্রায় রূপকথার মতোই লড়াই। ভবিষ্যতে ও আরো ভালো করবে বলে আমরা আশাবাদী।” মজিদা-কে বুধবার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর ওয়ার্ডের (২৪ নং) কাউন্সিলর তপন প্রধান সহ অনেকেই।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…