দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ জুন:‘আলোদিক’- আলো ও আশার পথে (Aalodik- Towards light & positivity)। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক অনন্য উদ্যোগ। মনে করিয়ে দেবে বছর দশেক আগের বাংলা সিনেমা ‘হেমলক সোসাইটি’র কথা। স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়া, হতাশ হয়ে পড়া, হীনমন্যতায় ভোগা, জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে যাওয়া নারী-পুরুষ’কে নতুন ‘আলো’ দেখানোই আসলে উদ্দেশ্য। কারণ, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার স্বয়ং জানিয়েছেন, “গত তিন বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে প্রায় ছ’শো মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। আতিমারী বা মহামারী’র পর সেই প্রবণতা আরও বাড়ছে। যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। তাই, ওদের পাশে থাকা আমাদের সকলের কর্তব্য। ওদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ ঘটাতে এবং জীবনে আশার আলো সঞ্চার করতেই জেলা পুলিশ শুরু করলো ‘আলোদিক’।” কয়েক সপ্তাহ আগেই এই বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। বেঙ্গল পোস্টে সেই খবর প্রকাশিত-ও হয়েছিল। মঙ্গলবার এই কর্মসূচির উদ্বোধন-ও হয়ে গেল মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে। প্রকাশিত হয়েছে জেলা পুলিশের বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর (৭০৭৬৭৬৭৫৭৫)। জেলা ও জেলার বাইরের বিশেষজ্ঞ কাউন্সিলর (Counselor) এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিয়ে এই কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবে জেলা পুলিশ।
উল্লেখ্য যে, জেলা পুলিশ সুপার এদিন জানিয়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে গত তিন বছরে প্রায় ৬০০ মানুষ আত্মহত্যা করেছেন বিভিন্ন কারণে। জেলা পুলিশের এই পর্যবেক্ষণে এই তথ্য উঠে আসার পর, রীতিমতো চমকে গিয়েছেন আধিকারিকরা। তাই, জেলার মানুষের হতাশা বা অবসাদ চিহ্নিত করে, ‘আত্মহত্যা’র প্রবণতা রুখতে এবার মাঠে নামলো জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের দাবি, “গত দু’বছরে এই মহামারী পর্বে এই সমস্যাটা আরও বেড়েছে। তাই, মানসিক চিকিৎসকদের একটি বড় অংশকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামল জেলা পুলিশ।” উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে- ‘আলোদিক।’ মঙ্গলবার জেলা শহর মেদিনীপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই উদ্যোগ শুরু হলো পুলিশের পক্ষ থেকে। জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, “ওদের পাশে থাকা, ওদের মানসিক স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখা আমাদের কর্তব্য। তাই এই প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ। মেদিনীপুর থেকে শুরু করে কলকাতার বিশেষজ্ঞ কাউন্সিলরদের আমরা সাহায্য নেব। যেকোনো প্রয়োজনে, যেকোনো সহায়তার জন্য আপনারা ফোন করুন আমাদের হেল্পলাইন নম্বরে (7076767575)।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ কাবেরী ভট্টাচার্য এদিন উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তিনি বললেন, “সাম্প্রতিক সময়ের নিরিখে এক অসাধারণ উদ্যোগ। জীবনের আলো পৌঁছে দেওয়া সকলের কাছেই।”