দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ এপ্রিল: শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডায়। শনিবার খড়্গপুর গ্রামীণের এই এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৪৬ ডিগ্রি (৪৫.৮)! যা গতকাল (২৭ এপ্রিল) দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে শনিবার রাতে জানায় দিল্লির মৌসম ভবন (ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ)। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে দেশে দ্বিতীয় স্থানে ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের নান্দিয়াল (প্রায় ৪৫ ডিগ্রি)। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, পানাগড়, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামেও গতকাল অর্থাৎ শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রির আশেপাশে। যদিও, মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের (Meteorological Park, Vidyasagar University) রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার জেলা শহর মেদিনীপুর ও সংলগ্ন এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস! গত ২০ এপ্রিলের (৪৫.৯৯) পর চলতি মরশুমে এটাই এখনও অবধি জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানা গেছে।
VU-র আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে এও জানা গেছে, আজ, রবিবার বিকেল ৫-টে পর্যন্ত জেলা শহর মেদিনীপুর ও সংলগ্ন এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দুপুর ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ রেকর্ড বা সংগ্রহ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এর আগে গত ২২ এপ্রিল তাপমাত্রার নিরিখে সারা দেশে চতুর্থ স্থানে ছিল শহর মেদিনীপুর। এদিকে, যে কলাইকুন্ডা এলাকা বায়ুসেনা বিমান ঘাঁটির জন্য দেশে বিখ্যাত। এবার সেই কলাইকুন্ডাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে সারা দেশে প্রথম স্থান দখল করে নিল! যা মোটেই গর্বের নয়, বরং আতঙ্কের বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা। এলাকার কৃষকরা জানাচ্ছেন, “শুকিয়ে যাচ্ছে ফসল। জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। সেলো বা মিনি সাবমার্সেবেল ফেলিওর হয়ে যাচ্ছে! এভাবে আর ক’দিন চললে যে কি হবে, তা ঈশ্বরই জানেন।” এলাকার মহিলারা বলছেন, “পানীয় জলের কষ্ট বাড়ছে। অনেক দূর থেকে জল আনতে হচ্ছে।”
অমর মাহাত নামে এলাকার এক সচেতন বাসিন্দা আবার বলেন, “এসবের জন্য তো আমরাই দায়ী। গাছ কেটে ফাঁকা করে দিয়েছি আমরা। সেই তুলনায় গাছ রোপন করা হয়নি। প্রকৃতির উপর অত্যাচার চালিয়েছে মানুষ। আজ তাই প্রকৃতিও মানুষের উপর প্রতিশোধ নিতে ছাড়ছেনা!” এর মধ্যেই আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে তাপপ্রবাহের চরম সতর্কবার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ৪-৫ দিন জঙ্গলমহল সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে এভাবেই চলবে তীব্র দাবদাহ (বা, তাপপ্রবাহ)। ২ মে’র পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। ৪ মে বা তারপর বৃষ্টির পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতে।