দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ১৫ জানুয়ারি: গান্ধী ঘাট থেকে বাবু ঘাট। ঘন কুয়াশা বা কুজ্ঝটিকার মায়াবী জালে জড়ানো মকর সংক্রান্তি! জানুয়ারির শুরু থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছিল রেকর্ড ঠান্ডা। ভেঙে দিয়েছে গত কয়েক দশকের রেকর্ড। ২০১৫ সালের রেকর্ড ভেঙে দিয়ে জানুয়ারির ৬ থেকে ৯ এ সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড গড়েছে ২০২৩। প্রায় গোটা রাজ্যের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ৭-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে! তার সঙ্গে ছিল কনকনে উত্তুরে হাওয়া। তবে, ১২ তারিখের পর থেকেই একটু একটু করে বেড়েছে তাপমাত্রা। এর মধ্যেই দক্ষিণা বাতাসে ভর করে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকেছে দক্ষিণবঙ্গে। উত্তুরে হাওয়াও আটকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে! ফলে, শুক্রবার থেকেই তাপমাত্রা বেড়েছে চড়চড় করে। শনিবার ছিল উষ্ণতম ১৪ জানুয়ারি। গত কয়েক দশকে এতো ‘গরম’ ১৪ জানুয়ারি নাকি অনুভব করেননি দক্ষিণবঙ্গবাসী। এমনটাই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। গতকাল অর্থাৎ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। জেলা শহর মেদিনীপুর সহ জঙ্গলমহলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী)। আজ, রবিবার (১৫ জানুয়ারি), মকর সংক্রান্তির দিন আবার ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা ছেয়ে আছে জঙ্গলমহল সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। গতকালের তুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রারও খুব একটা হেরফের হয়নি!

thebengalpost.net
ঘন কুয়াশার মধ্যেই মকর সংক্রান্তির পুণ্য স্নান (ছবি- মণিকাঞ্চন রায়):

তবে, আজ, সন্ধ্যার পর থেকেই তাপমাত্রা ফের নামতে শুরু করবে জঙ্গলমহল সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায়। এমনটাই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া সহ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি কমবে বলে পূর্বাভাস। কলকাতাতেও তাপমাত্রা কমবে। তবে, বুধবার থেকে ফের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে কলকাতা, দুই চব্বিশ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর সহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে। মঙ্গলবারও ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিক্ষিপ্ত কিছু এলাকায়। তারপর অবশ্য স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা কিছুটা নামবে। তবে, জানুয়ারির প্রথম দুই সপ্তাহের মত জাঁকিয়ে শীত পড়বে কিনা, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফে। এদিকে, ঘন কুয়াশা ঘেরা (কুজ্ঝটিকায় মোড়া) অন্ধকারের মধ্যেই পুণ্য স্নান সেরে নিল কলকাতা থেকে কাঁথি, ঝাড়গ্রাম থেকে মেদিনীপুর। অন্যান্য বছরের মতোই মেদিনীপুর শহরের গান্ধী ঘাটে ছিল পুন্যার্থীদের ভিড়। অনেকেই অবশ্য ঘন কুয়াশার কারণে বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি! তবে, পুলিশ-প্রশাসন ও পৌরসভার তরফে ছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এদিকে, মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির এলাকায় বসেছে মকর সংক্রান্তির ঐতিহ্যমণ্ডিত মেলা। অন্যদিকে, জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কগুলিতে ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে গেছে মারাত্মকভাবে। ফলে সতর্কতা অবলম্বন করে যানবাহন চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে ধর্মায় ভোররাতে একটি ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তবে, হতাহতের খবর নেই। (প্রচ্ছদের ছবি বা ফিচার ইমেজ- দেবনাথ মাইতি)

thebengalpost.net
কুয়াশায় মোড়া মেদিনীপুর গান্ধী ঘাট (ছবি- মণিকাঞ্চন রায়):