দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ মে: মাত্র কয়েক মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় লন্ডভন্ড গোটা জেলা! আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস ছিল সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড় বৃষ্টির। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের ১২-১৩ টি জেলায় সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ শুরু হয় প্রবল ঝড় বৃষ্টি। তবে, মাত্র ৫-৬ মিনিটের ভয়াবহ ঝড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে ব্যাপক প্রভাব পড়ল। মেদিনীপুর, খড়্গপুর থেকে শালবনী, কেশপুর সর্বত্র ভেঙে পড়েছে মাটির বাড়ি। উড়ে গেছে বাড়ির চাল। কেশপুরে মাটির বাড়ির চাল উড়ে গিয়ে, তার কাঠামো ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার! জানা গেছে মৃতার নাম ছবি পড়িয়া। কেশপুর ব্লকের গোলাড় এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। শালবনী ব্লকের পিড়াকাটা, ভীমপুর, দেবগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০০ মাটির ভেঙে পড়েছে কিংবা বাড়ির চাল উড়ে গেছে। শালবনী ব্লকের লালগেড়িয়া ও নিমতলাতে আহত হয়েছেন ২ জন। এদিকে প্রচন্ড ঝড়ে বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ে জেলা জুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে একাধিক গ্রাম।
জেলা শহর মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের সামনে বড় রাস্তার উপর বেশ কয়েকটি প্রাচীন গাছ ভেঙে পড়ে। জেলাশাসকের দপ্তরের সামনেও ভেঙে পড়ে গাছ। সাময়িকভাবে তৈরি হয় যানজট পৌরসভা সহ পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় রাস্তা যানজট মুক্ত করা হয় সন্ধ্যা নাগাদ। খড়্গপুর শহরের গোলবাজার এলাকায় মাতা পুজোর লাইটের তোরণ ভেঙে পড়ে। এই তোরণ লাগানো হয়েছিল প্রধান রাস্তার উপরেই। ঝড়ের কারণে হঠাৎ করে তোরণ রাস্তার উপরে উল্টে পড়ে। তোরণ ইলেকট্রিক খুঁটির উপরে পড়ার সাথে সাথে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ে। ওই এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে যায়। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছে পৌরসভা ও পুলিশ প্রশাসন। অন্যদিকে, আবহাওয়া দপ্তরের তরফে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে আগামী বুধবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টির হতে পারে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারও দক্ষিণবঙ্গে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার ৭টা পর্যন্ত মেদিনীপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৩০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে- ৩৭.৬২ এবং ২১.৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।