দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ আগস্ট: গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলে অবস্থান করছে ‘শক্তিশালী’ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী অক্ষরেখা। একইসঙ্গে ঝাড়খন্ড ও বাংলাদেশের জোড়া ঘূর্ণাবর্ত বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি করেছে। ফলস্বরূপ আজ, বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এবং আগামীকাল, শুক্রবার (২ আগস্ট) গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা! বৃহস্পতিবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির ‘কমলা’ সতর্কতা (Orange Alert) জারি করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান ও হুগলি জেলাতে। কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি সমস্ত জেলাতেই ভারী বৃষ্টির ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলায়। জারি করা হয়েছে ‘হলুদ’ সতর্কতা। শনি এবং রবিবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বহাল থাকবে দক্ষিণের প্রায় প্রতিটি জেলায়। তবে, পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের আশা, দক্ষিণবঙ্গে জুলাইয়ের বৃষ্টির ঘাটতি অনেকটাই মিটতে পারে আগস্টের শুরুতে। এই ক’দিন অবশ্যই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বজ্র বিদ্যুত সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায়, সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের কৃষকদের। যদিও, ধান রোয়ার কাজ চলায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মাঠে কাজ করে চলেছেন বঙ্গের কৃষকরা। আর তাতেই ‘প্রাণঘাতী’ বজ্রপাত পশ্চিম মেদিনীপুরের চার জন কৃষকের ‘প্রাণ’ কেড়ে নিল বুধবার দুপুরে। আহত একাধিক!
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বেলদা থানার রসুলপুর এলাকায়, মাঠে কাজ করছিলেন সমীর হাঁসদা (৫১) ও শকুন্তলা মান্ডি (২৪)। হঠাৎ বজ্রপাতে দু’জনেরই মৃত্যু হয়। অপরদিকে, নারায়ণগড় থানার যমুনা এলাকার বাসিন্দা চন্দ্রমোহন শিট (৬৬) ও কেশিয়াড়ি থানার সাহরিয়া এলাকার পরেশ মালিকের (৬৬)-ও মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। জানা গিয়েছে, রসুলপুর এলাকায় কয়েকজন মাঠে কাজ করছিলেন। হঠাৎই বাজ পড়লে কয়েকজন আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আনা হলে দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অপরদিকে, কেশিয়াড়ির সাহরিয়া এলাকায় বৃষ্টি মাথায় নিয়েই মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহত হন ৩ জন। কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে এলে একজনকে (পরেশ মালিক) মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। নারায়ণগড়ের ঘটনাতেও বৃদ্ধ চন্দ্রনাথ শিট মাঠে কাজ করার সময় বজ্রাহত হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন! কৃষকদের উদ্দেশ্যে আবারও তাই ‘বজ্রপাত’-র সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। বজ্র বিদ্যুত সহ বৃষ্টির সময় মাঠ থেকে সংলগ্ন কোন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।