দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ এপ্রিল:মধ্যরাতে মেদিনীপুর শহরের মহতাবপুর মহাশ্মশানে (পদ্মাবতী শ্মশান) চার যুবক। তারাপীঠের ‘তান্ত্রিক’ সেজে তাণ্ডব করতে ইচ্ছে হয়েছিল হয়তো! আর, সেই কাণ্ড-কারখানার ভিডিও ভাইরাল করে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউয়ার পাওয়ার বাসনাও ছিল নিঃসন্দেহে। তবে,‌ সত্যি সত্যিই তা ভাইরাল হলে যে পুলিশের লাঠির‌ বাড়ি আর জেলের ভাত-ও কপালে জুটতে পারে, তা হয়তো ভাবেনি শহরের এই চার যুবক! এখনও অবধি তাদের গ্রেফতার করা না হলেও, কোতোয়ালী থানার পুলিশ তাদের ‘আটক’ করে চরম ধাতানি (পড়ুন, ধমকানি) দিচ্ছেন বলেই সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার সকাল থেকে ফেসবুক জুড়ে একটি ‘লাইভ’ ভিডিও ভাইরাল হয়। আর, বইতে থাকে নিন্দার ঝড়! ভাইরাল লাইভ ভিডিও-তে দেখা যায়, মেদিনীপুর শহরের চার যুবক শুক্রবার মধ্যরাত পেরিয়ে, ঘড়ির কাঁটার হিসেবে আজ, শনিবার (৩০ এপ্রিল) রাত্রি ২ টো নাগাদ মেদিনীপুর শহরের পদ্মাবতী শ্মশান (মহতাবপুর) এ পৌঁছে অদ্ভুত সব কাণ্ড কারখানা শুরু করেছে! চারজনের মধ্যে একজনকে রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে দেখা যায়, মৃতদেহ দাহ করার পর যেখানে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে ফুলের মালা প্রভৃতি দিয়ে সাজানো হয়, সেই এলাকাগুলিতে। ফুলের মালা ছুঁড়ে, মাটির হাঁড়ি পা দিয়ে ভেঙে, হাঁড়ির জল পান করে ‘তিনি’ নাকি ‘তারা মা’-এর সাধনা করছেন! একজন যুবক সেই কাণ্ডকারখানা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘লাইভ’ ও করে। আর মুখে বলতে থাকে, একজন গৃহবধূ (এয়ো স্ত্রী)-কে দাহ করার খবর পেয়ে তারা এখানে এসেছে। জয় তারা মায়ের জয়! তারা মায়ের আশীর্বাদ ছাড়া এরকম করা সম্ভব-ই নয়। অপর দু’জন অবশ্য চুপচাপ এইসব উপভোগ করে! সেই সময় শ্মশান পুরো নিঃস্তব্ধ ছিল বলেও যুবকেরা তাদের ভিডিওতে উল্লেখ করে।

thebengalpost.net
চলছে তাণ্ডব :

এদিকে, সাতসকালেই এই ভিডিও ধীরে ধীরে ভাইরাল হতে শুরু করে। শহরের সচেতন নাগরিকরা এই অপসংস্কৃতির নিন্দা করতে থাকেন।‌ এভাবেই, সেই ভিডিও শেয়ার হতে হতে পৌঁছে যায় কোতোয়ালী থানার টাউন বাবু (তরুণ কুমার দে) সহ পুলিশ কর্মীদের কাছেও। সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ওই যুবকদের দ্রুত চিহ্নিত করে, তাদের কোতোয়ালী থানায় আটক করে নিয়ে আসা হয়। ততক্ষণে অবশ্য ‘অবস্থা বেগতিক’ দেখে ওই ভিডিও নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ডিলিট করে দেন যুবক। জানা যায়, চারজনের মধ্যে ২ জন শহরের বল্লভপুর, ১ জন নজরগঞ্জ এবং ‘তান্ত্রিক বাবা’ শেখপুরা’র বাসিন্দা। পবিত্র মহাশ্মশানে এই ধরনের ‘নোংরামি’ করে, সেই ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হবেনা জানতে চাওয়া হয়? তবে, শিক্ষিত ওই চার যুবক নিজেদের ভুল‌ স্বীকার করে, এবারের মতো ক্ষমা চেয়ে পার পেতে চাইছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

thebengalpost.net
ভিডিও করা হচ্ছে যুবকের কীর্তি :
(শুধুমাত্র, ফিচার ইমেজ বা প্রচ্ছদ ছবিতে যুবকদের ছবির নেপথ্যে শ্মশানের যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তা আমাদের ফাইল ছবি। ওই সময় শ্মশানের ওই এলাকাতেই যুবকেরা এই কান্ড ঘটালেও, শ্মশান জনশূন্য ছিল।)