দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ নভেম্বর: এলাকার ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ বিধায়কের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থানার ওসি! এখানেই শেষ নয়। কেক কাটার সময় বিধায়ক অনুগামীদের সঙ্গেই তাল মিলিয়ে হাততালি! তারপর, স্বয়ং বিধায়কের হাত থেকে কেক খাওয়া। সোমবার থেকে এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল (সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট) হয়েছে। আর, সেই ভিডিও Facebook ও WhatsApp এর বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করে তীব্র কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। ঘটনাটি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় বিধানসভার বলে জানা গেছে। ভিডিও-তে যাঁকে‌ কেক কাটতে দেখা যাচ্ছে, তিনি স্বয়ং নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট। আর, যে পুলিশ অফিসার-কে তাঁর হাত থেকে কেক খেতে দেখা গেছে, তিনি নারায়ণগড় থানার ওসি (Officer in Charge) আনিসুর রহমান। আর, এই ভিডিও ঘিরেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকেই। তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি থেকে সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারীরা। যদিও, আপত্তির কিছু দেখছেন না স্বয়ং বিধায়ক। তাঁর মতে, “যে কেউ এক জন বিধায়ককে শুভেচ্ছা জানাতে আসতেই পারেন। এটাই তো বাংলার সংস্কৃতি। এ নিয়ে রাজনীতি করার তো কিছু নেই!”

thebengalpost.net
ওসিকে কেক খাইয়ে দিচ্ছেন বিধায়ক (ভাইরাল ভিডিও থেকে নেওয়া) :

অন্যদিকে, বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ওসি আনিসুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন “এলাকার বিধায়ক। তাঁকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম। তখন কেক কাটা চলছিল। শুভেচ্ছা জানিয়ে চলে এসেছি।” অন্যদিকে, পুলিশ-কে তীব্র কটাক্ষ করে বিজেপি’র মেদিনীপুর জেলা সহ-সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি জানিয়েছেন, “এটাই তো পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে শুরু করে গোটা রাজ্যের পুলিশের আসল চরিত্র! দলদাসে পরিণত হয়েছেন ওনারা। বিধায়কের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে একজন থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কিভাবে হাততালি দিচ্ছেন আর কেক খাচ্ছেন; তা গোটা রাজ্যবাসী দেখলো। লজ্জার বিষয়। নিন্দা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা।” একইভাবে সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারী জানিয়েছেন, “খুব সম্ভবত রবিবার রাতে বিধায়কের দলীয় কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানেই ‘জো হুজুর’ বলে পৌঁছে গিয়েছিলেন থানার ওসি। অবাক হওয়ার কিছু নেই! এটাই পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পুলিশের নৈতিক অধঃপতনের বাস্তব চিত্র।” বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস জানিয়েছেন, “বিষয়টি লজ্জার এবং ধিক্কার জানানোর মতো হলেও, আমরা একটুও অবাক হইনি! কারণ, এই ভিডিও-টি বাইরে বেরিয়েছে বলে তাই, এর থেকেও লজ্জাজনক কাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন তৃণমূলের ‘দলদাস’ পুলিশ।” অন্যদিকে, এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের তরফে কেউই অবশ্য প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি! ফোন ধরলেও, ব্যস্ততার অজুহাত দিয়ে জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “বিষয়টি ঠিক জানিনা! দলীয় বিষয়-ও নয়। তবে, খোঁজ নিয়ে দেখব।”