দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ ফেব্রুয়ারি: গত ৬ জানুয়ারি (২০২৩) থেকে উপাচার্য-হীন (No Vice Chancellor) বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (Vidyasagar University)। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ থেকে শুরু করে গবেষণামূলক ডিগ্রি প্রদান, কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের ডিন নির্বাচন কিংবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের নথিপত্রে স্বাক্ষর- আটকে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্তরের প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলিই। এমনকি অধ্যাপকদের ছুটি কিংবা কর্মচারীদের বেতন সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়েও সমস্যা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে, প্রায় ২ মাস ধরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, পূর্ব মেদিনীপুরের মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি) স্থায়ী উপাচার্য না থাকলেও, আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত তেমন হেলদোল দেখা যায়নি রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর থেকে শুরু করে আচার্য বা রাজ্যপালের (সি.ভি আনন্দ বোস) তরফে।

thebengalpost.net
উপাচার্য-হীন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (Vidyasagar University):

আজ, মঙ্গলবারের (২৮ ফেব্রুয়ারি) বৈঠকে এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রতিনিধিকেই ডাকা হয়নি বলে জানা গেছে। তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিন অবশ্য অন্যান্য ৭-৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ডাকা হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী ও আচার্যের বৈঠকে। সার্চ কমিটি পরিবর্তনের আগে ওই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মেয়াদ ৩-৪ মাস বাড়ানো হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা আজ পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছেন আচার্যের (রাজ্যপালের) হাতে। তারপরই তাঁদের হাতে মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশিকা তুলে দেওয়া হয়েছে।” যদিও, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, একটি সূত্রের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের কাছে এই বৈঠক সংক্রান্ত কোনো আমন্ত্রণই আসেনি। এমনকি, কবে নাগাদ স্থায়ী বা অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হবে, সেই বিষয়েও তাঁরা এখনও অন্ধকারে বলে জানা গেছে! এদিকে, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেমিস্টারের রেজাল্ট প্রকাশ থেকে শুরু করে গবেষকদের ডিগ্রি প্রদান সংক্রান্ত কোনো কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন মহলেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স এবং আর্টস বিভাগের ডিন (অধ্যক্ষ)-দেরও মেয়াদ শেষ হয়েছে, কিন্তু নতুন ‘ডিন’ (Dean) ও নিয়োগ করা যাচ্ছেনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সংগঠনের (VUSKU) সম্পাদক দিগন্ত ভুঁইয়া জানান, “পড়ুয়া‌ ও গবেষকরা ভয়ঙ্কর সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। প্রায় ২ মাস হতে চললো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। এরকম পরিস্থিতি কখনো হয়নি। কর্মরত কর্মচারীরা ছুটি নিতে সমস্যায় পড়ছেন। আবার, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের অবসরকালীন নথিপত্র প্রস্তুত করা যাচ্ছে না উপাচার্যের স্বাক্ষর ছাড়া। এমনই নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে।”