দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ এপ্রিল: স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ, জাতীয় শিক্ষানীতি চালু, ছাত্র সংসদের নির্বাচন সহ একাধিক দাবিতে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি (ABVP)। বুধবার দুপুরে ABVP’র এই কর্মসূচিতে ঘিরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন TMCP’র সঙ্গে ধুন্ধুমার বেঁধে যায় ABVP’র। এবিভিপি’র পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাঁদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছাত্র-ছাত্রীরা। এমনকি রড-লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ছুটে পালিয়ে অনেকে নিজেদেরকে রক্ষা করেন বলেও অভিযোগ। উল্টো দিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, কর্মসূচির নামে ক্যাম্পাসে গুন্ডামি করতে এসেছিল এবিভিপি। ছাত্র পরিষদের পতাকা ছেঁড়া এবং পায়ে করে তা মাড়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে থাকা কর্মীদের উপর হামলা, সবকিছুই করছিল ওরা। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন আমাদের কিছু ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে, তাঁদের উপরও হামলা চালায় এবিভিপি। শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আসে কোতোয়ালী থানার পুলিশ। অভিযোগ, এবিভিপি’র ৬ জনকে আটক (বা, গ্রেপ্তার) করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কাউকেই আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও নিজেদের ঘোষিত কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছিল বিজেপির ছাত্র সংগঠনটি। তাঁদের রাজ্য সহ-সম্পাদক মৃদাঙ্ক সাহার দাবি, “পুলিশকে জানিয়েই এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশ পৌঁছয়নি। উল্টে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বাহিনীকে আমাদের উপর হামলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ২ জন ছাত্রী ও ২ জন ছাত্র তৃণমূল গুন্ডা বাহিনীর হামলায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই ঘটনায় আমাদের ১২ জন কার্যকর্তা গ্রেফতার হয়েছে। তৃণমূলের ছাত্রদের টিকিও ছুঁতে পারেনি পুলিশ! ধিক্কার জানাচ্ছি আমরা।” অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে প্রসেনজিৎ বেরা বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমাদের কেউ হামলা করেনি। বহিরাগতদের নিয়ে এসে ক্যাম্পাসে অশান্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছে এবিভিপি। ওরা এতোটাই নিকৃষ্ট যে, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছে। আর, এই মুহূর্তে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য আছেন। ওঁরা জানেই না, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি দেখছেন স্বয়ং রাজ্যপাল বা আচার্য। আর, জাতীয় শিক্ষা নীতির বিষয়টিও আলোচনার মধ্যে আছে। এই সমস্ত ইস্যুর নাম করে আমাদের শান্তির বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ওরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র-ছাত্রী তার প্রতিবাদ করতে গেলেই গন্ডগোল হয়। এই ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এই ধরনের অশান্তি বরদাস্ত করবে না।”