মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ডিসেম্বর: বাংলার বিভিন্ন প্রান্তেই দেখা যায় এই ভেষজ উদ্ভিদ তথা গুল্ম প্রজাতির গাছ। এর বীজ থেকে প্রাপ্ত রং সিঁদুরের মতো বলেই এই গাছের নাম ‘সিন্দুরী’ (Sinduri Plant/ Achiote) বলে মত বিজ্ঞানীদের। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম- বিক্সা অরেলানা (Bixa orellana)। প্রাচীন কাল থেকেই সিন্দুরী ফলের বীজ থেকে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক লাল রং মিষ্টান্ন তৈরি এবং কাপড় রং করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও সিন্দুরীর বহুল ব্যবহার রয়েছে। সিন্দুরী থেকে নানা আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি হয় বলেও জানা যায়। তবে, অতি সম্প্রতি এই সিন্দুরী বা বিক্সা অরেলানা (Bixa orellana) থেকে প্রাপ্ত বিক্সিন (Bixin) যৌগ ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের অ্যালোপেথিক ওষুধ (Allopathic medicine) তৈরির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে বলে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) রসায়ন বিভাগের একদল বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) রসায়ন বিভাগের বরিষ্ঠ অধ্যাপক ড. ব্রজগোপাল বাগ (Prof. Braja Gopal Bag)-র নেতৃত্বেই এই গবেষণা হয়। প্রফেসর ড. বাগ’কে এই গবেষণায় সাহায্য করেন তাঁর দুই স্কলার (গবেষক) সৌমেন পাত্র এবং সুখেন্দু কর। তাঁদের সেই গবেষণা বা রিসার্চ (Research) পৃথিবী-বিখ্যাত ‘কেমিস্ট্রি অ্যান এশিয়ান জার্নাল’ (Chemistry- An Asian Journal)-এও প্রকাশিত হয়েছে অতি সম্প্রতি। প্রফেসর বাগ বলেন, “সিন্দুরী আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে ভালোই জন্মায়। সাধারণত মিষ্টান্ন শিল্প এবং কাপড় রং করার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার রয়েছে। এই রং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন বলে এই সিন্দুরীর অন্যান্য ব্যবহারের বিষয়ে উৎসাহিত হই বছর তিন-চারেক আগে।” ড. বাগ এও জানান, “সিন্দুরী বা বিক্সা অরেলেনা’র বীজ থেকে বিক্সিন (Bixin) নামক একটি যৌগ পাওয়া গিয়েছে, যা জলীয় দ্রবণে ছোটো ছোট ‘Microsized Vesicle’ (ছোট ছোট গহ্বর বা কোষ গহ্বর) তৈরী করতে পারে। এই ভেসিকলগুলি যে কোনো ড্রাগ বা ওষুধ গ্রহণ (entrap) গ্রহণ বা শোষণ করে, তা উপযুক্ত জায়াগায় পৌঁছে দিতে পারে বা মুক্ত করতে পারে (Drug Delivery)। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এই বিক্সিন যৌগ ক্যান্সারের মত মারণ রোগের ওষুধ পরিবহনের ক্ষেত্রে বা অ্যান্টি ক্যান্সার ড্রাগ ডেলিভারি (Drug Delivery)-র ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমরা গবেষণায় লক্ষ্য করেছি।”
ড. বাগের নেতৃত্বাধীন গবেষকদলের এই গবেষণাটি ইতিমধ্যেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা ক্ষেত্রে। গবেষণাগারে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞানী প্রফেসর ব্রজগোপাল বাগ। আর তারপরই রসায়ন বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মর্যাদাপূর্ণ ‘কেমিস্ট্রি অ্যান এশিয়ান জার্নাল’ (Chemistry- An Asian Journal)-এ এই গবেষণার বিষয়টি সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে অতি সম্প্রতি। ফলে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের মোকাবিলায় এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী বলে মত বিজ্ঞানীদের। অধ্যাপক বাগ বলেন, “এই যৌগ প্রাকৃতিক, সহজলভ্য এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন হওয়ায়, ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে এই বিক্সিন যৌগ যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে, তা বলাই বাহুল্য।” এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, প্রায় ২৪ বছর ধরে (২০০০ সাল থেকে) বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Vidyasagar University) সাফল্যের সাথে অধ্যাপনা ও গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই নানা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে নিজের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল করেছেন অধ্যাপক বাগ। বেশ কিছু বছর আগে অর্জুন গাছের ছাল থেকে প্রাপ্ত অর্জুনোলিক অ্যাসিড (arjunolic acid) নিয়েও যুগান্তকারী গবেষণা করেছেন তিনি। তাঁর সেই গবেষণা রসায়ন বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ জার্নাল IUPAC (International Union of Pure and Applied Chemistry)-তেও জায়গা করে নিয়েছে।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৪ ডিসেম্বর: বদলেছে সময়। পরিস্থিতিরও 'পরিবর্তন' হয়েছে। দলীয়-ভান্ডারের দশা কার্যত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ ডিসেম্বর: বিকেল ৩টা নাগাদ পরিচালন সমিতির সভাপতি (প্রেসিডেন্ট)…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ ডিসেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের বালিচকে ওভারব্রিজ বা উড়ালপুলের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ ডিসেম্বর: উপনির্বাচনে 'বিজয়ী' বাংলার নবনির্বাচিত ৬ জন বিধায়ক…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২ ডিসেম্বর: আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) ইতিহাসে এর আগে বছরে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২১ ডিসেম্বর: "দিলীপ দা আপনি যে সদস্যতা অভিযান কর্মসূচি করছেন,…