দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২০ আগস্ট: “১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৪২ জন শিক্ষক এবং ২২৪ জন ছাত্র নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)। বিশ্বের অন্যতম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১৭ হাজার পড়ুয়া। ৮০ হাজারের বেশি প্রাক্তনী। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ১০টি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া।” আইআইটি খড়্গপুরের ৭৩-তম প্রতিষ্ঠা দিবস (73rd Foundation Day) উদযাপনের মঞ্চে শুক্রবার (১৮ আগস্ট) ঠিক এমনই প্রত্যয়ী কথা শোনালেন প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা (Director IIT Kharagpur) ড. বীরেন্দ্র কুমার তেওয়ারি (Prof. Virendra Kumar Tewari)। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালের ১৮ আগস্ট তৎকালীন ‘হিজলি বন্দীনিবাস’ (Hijli Detention Camp) প্রাঙ্গণে গড়ে উঠেছিল স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রযুক্তিগত বিদ্যার পীঠস্থান আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)। এই মুহূর্তে শুধু ভারতেই নয়; সারা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান চর্চা, প্রযুক্তিবিদ্যা ও গবেষণা কেন্দ্রের নাম হল- আইআইটি খড়গপুর। দেশের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও এই আইআইটি-র বহু শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠিত। মহাকাশ গবেষণা থেকে আবহাওয়া, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণাতেও সারা বিশ্বে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন খড়্গপুর আইআইটি-র বিজ্ঞানীরা। প্রযুক্তি বিদ্যার একাধিক কোর্সের সাথে একাধিক বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের কোর্স চালু করা হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি চালু হয়েছে ফোক আর্ট এবং মিউজিক বিষয়ে পড়াশোনা। হয়েছে মেডিক্যাল কলেজ। এছাড়াও, দেশ ও বিদেশের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প সংগঠনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত করে কর্মক্ষেত্রে আরও দূরদর্শী ভাবনা রয়েছে আইআইটি খড়্গপুরের। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Arthur Intelligence (AI)-এর একটি ডিপ্লোমা কোর্সের জন্যও আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের তরফে।
প্রাচীন এই আইআইটি-র ৭৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় শুক্রবার। প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইন মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন মহামোহপাধ্যায় ভদ্রেশদাস স্বামী। তিনি বলেন, “ভারত আধ্যাত্মিকতার দেশ। এই প্রতিষ্ঠানের মূল মন্ত্র হলো- ‘যোগ কর্মশু কৌশলম’। ভারত হল শিক্ষার দেশ; শিল্প-সঙ্গীত-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং দর্শন নিয়ে গবেষণার দেশ; নতুন উদ্ভাবনের দেশ; সাহিত্যের উত্তরাধিকার এবং শাস্ত্রের দেশ; আধ্যাত্মিকতার দেশ; আদর্শ আর ঐতিহ্যের দেশ; আমাদের দেশ বৈচিত্রের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে। আমি গর্বের সাথে বলতে পারি ভারত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং গীতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্য সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্র, টাটা মেডিকেল সেন্টারে ডিরেক্টর ডক্টর পি. অরুণ সহ আইআইটি-র প্রাক্তন ও বর্তমান অধ্যাপক-অধ্যাপিকা ও পড়ুয়ারা। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শুভ সূচনা হয় প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের। পাশাপাশি এদিনের এই অনুষ্ঠান থেকে আইআইটি খড়গপুর থেকে উত্তীর্ণ, একাধিক নামকরা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী, আইআইটি খড়্গপুরের বিভিন্ন বিভাগের কর্মরত অধ্যাপক, অধ্যাপিকা এমনকি আইআইটির কর্মীদের সংবর্ধনা জানানো হয়। এদিকে, যাদবপুর কাণ্ডের মধ্যেই উত্তর প্রদেশের মুখ্যসচিব সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কথাও জানান মুখ্যসচিব দুর্গেশ শঙ্কর মিশ্র।