দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম, ৬ ফেব্রুয়ারি: দীর্ঘ ৯ বছর পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে সোমবার (6 February) সন্ধ্যায় মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার (Midnapore Central Jail) থেকে জামিনে মুক্ত হলেন লালগড়ের নেতাই-কান্ডের মূল অভিযুক্ত অনুজ পান্ডে। তবে, সোমবার সন্ধ্যায় জেল-মুক্ত হয়েই একপ্রকার ‘ছুট’ দিলেন সিপিআইএম এর একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতা!

thebengalpost.net
অনুজ পান্ডে:

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের (সেই সময়ের অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্তর্গত) নেতাই গ্রামে গুলিতে নিহত হন একাধিক মহিলা সহ ৯ জন নিরীহ গ্রামবাসী। আহত হন প্রায় ২৮ জন। সিপিআইএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে সিপিআইএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। সিপিআইএমের তরফে অবশ্য তৃণমূল-মাও আঁতাত ও চক্রান্তের দাবি তোলা হয়। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর নেতাই-মামলায় সিপিআইএম এর লালগড় জোনাল কমিটির তৎকালীন সম্পাদক অনুজ পান্ডে, ধরমপুর লোকাল কমিটির তৎকালীন সম্পাদক ডালিম পান্ডে, মহিলা নেত্রী ফুল্লরা মন্ডল, তপন দে সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়। ২০১৪ সালের ৬ মে মাসে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অনুজ পান্ডেকে। তার আগেই (২৮ এপ্রিল) হায়দ্রাবাদ থেকে গ্রেফতার হন ডালিম ও তপন। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। গত ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্ট জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেন অনুজ পান্ডে, ডালিম পান্ডে ও তপন দে-কে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মত গত ২ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান ডালিম পান্ডে ও তপন দে। তবে, নথিপত্রে ত্রুটি থাকায় ওইদিন কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাননি অনুজ। পুনরায় নথিপত্র ঠিক করে, সোমবার জমা দেওয়া হয়। অবশেষে এদিন সন্ধ্যায় সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান তিনি। তবে, ডালিম-তপন’রা সেদিন (২ ফেব্রুয়ারি) জেল থেকে বেরিয়ে হাসিমুখে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সরকারের চক্রান্তের অভিযোগ তুললেও, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এদিন (৬ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে যান অনুজ। সংশোধনাগার থেকে বেরিয়েই একপ্রকার ছুট দেন CPIM এর একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই জেলা নেতা! কেন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার সাহস দেখালেন না অনুজ পান্ডে? সংশোধনাগারের বাইরে উপস্থিত অন্যান্য সিপিএম নেতৃত্ব সঠিক কারণ দর্শাতে পারলেন না অনুজ পান্ডের ছুটে পালানোর ঘটনার। যদিও, তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন পর (প্রায় ৯ বছর) জেল মুক্ত হয়েছেন, তার উপরে বাড়ি অনেক দূরে (লালগড়) হওয়ায়, তিনি এদিন সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন!