দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ ডিসেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘জলে ডুবে’ মৃত্যু হল দুই শিশুর। ঘটনাস্থল পৃথক হলেও, মর্মান্তিক দু্’টি ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী। প্রথম ঘটনাটি বেলদা থানার, দ্বিতীয় ঘটনাটি কেশিয়াড়ি থানার। প্রথম ঘটনায় জানা গেছে, দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে পুকুর থেকেই উদ্ধার হয়েছে বছর চারেকের শিশু কন্যার দেহ। ঘটনায় শোকের ছায়া বেলদা থানার সাউরি গ্রাম পঞ্চায়েতের আগরবাড়চক গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুর থেকে স্থানীয় আশিস মান্নার জমজ দুই কন্যা সন্তানের অন্যতম চার বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান আর্জা মাইতি নিখোঁজ ছিল। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও না পাওয়ার পর, সোমবার বেলদা থানার অন্তর্গত জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়িতে মিসিং ডায়েরি করেন নিখোঁজ ওই কন্যা সন্তানের বাবা আশিস মান্না। এরপর, মঙ্গলবার সকালে বাড়ির থেকে কিছুটা দূরের পুকুরে ৪ বছরের শিশু কন্যার মৃতদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর, পরিবারে খবর দিলে পরিবারের লোকেরা দেহ শনাক্ত করেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে, ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে। তবে, কি করে বাড়ি থেকে দূরের পুকুরে ওই কন্যাসন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার হল, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ঘটনায় সমগ্র এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া!

thebengalpost.net
বেলদায় শোকার্ত পরিবার :

অন্যদিকে, মঙ্গলবার দিনই কেশিয়াড়ি থানার হাসিমপুর এলাকায় এক শিশুর জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে! তবে, ওই মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে শিশুমৃত্যুকে ঘিরে রীতিমতো ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে হাসপাতাল চত্বরে। কেশিয়াড়ি থানার হাসিমপুর এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ মান্ডির ১ বছর ৩ মাস বয়সী শিশু মার্শাল মান্ডিকে মৃতপ্রায় অবস্থায় কেশিয়াড়ী হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারের লোকজন। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশুকে। যদিও, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে , জলে ডুবে অনেকক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছিল ওই শিশুর! এদিকে, চিকিৎসকেরা মৃত্যুর খবর জানাতেই পরিবারের লোকজনদের সাথে বচসায় জড়িয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিবারের দাবি, শিশুটি সবার অলক্ষ্যে জলাশয়ে ডুবে যায়। এরপর, কয়েকজন দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই, রাস্তায় বা বাড়িতেই মৃত্যু হয়েছিল ওই শিশুটির। এনিয়েই শুরু হয় উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা! এরপর, পুলিশে খবর দিয়ে মৃত শিশুটির ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং বোঝানোর চেষ্টা করেন। অন্যদিকে, তিন ঘন্টা সময় চেয়ে মৃত শিশুটিকে সুস্থ করার জন্য ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার দাবি করে শিশুটির পরিবারের লোকজন! পরিবারের দাবি, শিশুটিকে ওঝার কাছে নিয়ে গেলে ভালো হয়ে যেত। তবে, শেষপর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে মৃতদেহ উদ্ধার করে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।