দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ সেপ্টেম্বর: দুপুর নাগাদ পুলিশের কাছে খবর যায় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। কিন্তু, তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশ-কে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হল জমা জলের মধ্যে! অবশেষে, জমা জলের মধ্যে প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে অহল্যা-কে উদ্ধার করলো নারায়ণগড় থানার পুলিশ! সাহায্য নেওয়া হল কলার ভেলার। তবে, প্রাণ ছিলোনা অহল্যার দেহে! কলার ভেলায় করে অহল্যা’র মৃতদেহ ভাসিয়ে নিয়ে আসা হলো প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে। জল যন্ত্রণার মোকাবিলা করে মৃতদেহ যখন নারায়ণগড় থানায় নিয়ে আসা হয়, তখন বাজে সন্ধ্যা সাতটা। প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় থানার সরিষাগেরিয়া এলাকায়, বুধবার দুপুর নাগাদ দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় অহল্যা সাই (৫৮) এর। এদিকে, নারায়ণগড় থানা থেকে বাখরাবাদের সরিষাগেড়িয়া গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। প্রথম ৭ কিলোমিটার রাস্তা গাড়িতে যাওয়ার পর মাথায় হাত পড়ে পুলিশের। মৃতদেহ উদ্ধার করা হবে কিভাবে! এরপর, নারায়ণগড় থানার ওসি আনিসুর রহমানের উদ্যোগে, কলার ভেলা তৈরি করা হয়। শেষ আড়াই কিলোমিটার রাস্তা ওই কলার ভেলায় করে সরিষাগেরিয়া গ্রামে পৌঁছায় পুলিশ। সন্ধ্যা নাগাদ উদ্ধার করা হয় অহল্যা-র প্রাণহীন দেহ!

thebengalpost.net
নারায়ণগড়ে কলায় ভেলায় করে অহল্যা সাই এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হল :

এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত মোট ৭ জনের মৃত্যু’র খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল। অহল্যা সাই ছাড়াও অন্যান্যরা হলেন- কেশপুর থানার আমড়াকুচির সান্তেরা গ্রামের বাসিন্দা অরুণ শান্ত (৪৫); কেশিয়ারী থানার খাজরা গ্রামের গৃহবধূ বিজলী পাতর; মেদিনীপুর সদর ব্লকের জামকুণ্ডার বাসিন্দা কোহিনুর বিবি এবং খড়্গপুর গ্রামীণের (১ নং ব্লকের) পশ্চিম পাথরি গ্রামে রাখাল হেমব্রম (৩৬)। এছাড়াও, আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলায়। তাঁদের সুস্পষ্ট নাম ও ঠিকানা এখনও দেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের তরফ। তবে, খড়্গপুর টাউনের ৮ নং ওয়ার্ডের সঞ্জয় খামরুই নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার রাতে। অন্যদিকে, সন্ধ্যা নাগাদ খবর পাওয়া গেছে, কেশপুর ব্লকের ১ নং অঞ্চলের চাঁদমুড়া গ্ৰামে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে সনাতন সরেন নামে এক বালকের। তার বয়স মাত্র ৮ বছর বলে জানা গেছে স্থানীয় সূত্রে। যদিও, শেষের দুই মৃত্যু’র ঘটনা এখনও সরকারিভাবে রেকর্ড হয়নি বলে জানা গেছে। এছাড়াও, জেলায় প্রায় আট হাজার মাটির বাড়ি ধুলিস্যাৎ হয়েছে বলেও জানা গেছে জেলা প্রশাসন সূত্রে। অপরদিকে, সবংয়ে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ১২ বছর পর বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া।

thebengalpost.net
জামকুণ্ডায় কোহিনুর বিবির মৃতদেহ :

thebengalpost.net
মৃত সনাতন সরেন (৮) :