দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুন: দুপুর নাগাদ কলেজের উদ্দেশ্যেই রওনা দিয়েছিলেন স্বাগতা।‌ গলায় ঝুলছিল আই কার্ডটিও (College Identity Card)। কলেজে ঢোকার ঠিক মুখেই ৬০ নং জাতীয় সড়কের উপর মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সেই মেয়েরই! মেদিনীপুর শহর থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে অবস্থিত মেদিনীপুর সিটি কলেজের (Midnapore City College) মাস্টার অফ হসপিটাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দ্বিতীয় সেমিস্টারের (M.A 2nd Sem) ছাত্রী ছিলেন স্বাগতা হাজরা। জানা যায়, মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনের বাসিন্দা বছর তেইশের স্বাগতা আর পাঁচটা দিনের মতোই অটোতে করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু, দুপুর‌ ঠিক আড়াইটা নাগাদ ঘটে যাওয়া আকস্মিক এই দুর্ঘটনায় যেন মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে পরিবারের সকলের! ঘটনাস্থল থেকে স্বাগতা-কে উদ্ধার করে, একটি অটোতে করেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন! তবে, দুর্ঘটনাটি ঠিক কিভাবে ঘটেছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও, ঘটনাস্থল থেকে একটি রয়েল এনফিল্ড বাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে, বাইকের চালক পলাতক। এদিকে, ঘটনা ঘিরে শহর জুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া!

thebengalpost.net
মেদিনীপুর সিটি কলেজ :

স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ঠিক ২ টো ২৩ নাগাদ, মেদিনীপুর শহরের অদূরে শালবনী থানার অধীন ভাদুতলায় অবস্থিত মেদিনীপুর সিটি কলেজের একেবারে সামনেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। কলেজে ঢোকার ঠিক মুখেই ৬০ নং জাতীয় সড়কের উপর লুটিয়ে পড়েন স্বাগতা। অনুমান করা হচ্ছে, ওই রয়েল এনফিল্ড বাইকের ধাক্কাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু ছাত্র-ছাত্রী তেমনটাই জানিয়েছেন। অপরদিকে, সিসিটিভি ফুটেজে দুর্ঘটনার মুহূর্তের ছবি সরাসরি ধরা পড়েনি। তবে, তার পরের মুহূর্তে ধরা পড়েছে, ভাদুতলা থেকে মেদিনীপুর শহরের দিকে যাওয়া ওই বাইকের চালক ছিটকে পড়েন রাস্তার বাম দিকে এবং স্বাগতা ছিটকে পড়েন রাস্তার উপর। এরপর, দু’জনকেই উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা স্বাগতা-কে মৃত বলে ঘোষণা করেন! অন্যদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে আর ওই বাইক চালক যুবকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পুলিশ তার সন্ধান চালাচ্ছে। তবে, তার বাইকটি দুর্ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে পুলিশ। জেলা শহর মেদিনীপুরের অভিজাত এলাকা বার্জটাউনের বাসিন্দা স্বাগতা’রা ছিলেন এক ভাই ও এক বোন। সদ্য বিবাহিত দাদা সুশোভন হাজরা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চুক্তিভিত্তিক কর্মী। এই মুহূর্তে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই তাঁরা কেউই। ঘটনায় একপ্রকার শোকস্তব্ধ স্বগতা’র পরিবার! হাসিখুশি মেয়ের আকস্মিক এই প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো শহর জুড়ে।

thebengalpost.net
স্বাগতা হাজরা (ফেসবুক ছবি) :

thebengalpost.net
সেই বাইক :