তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ ফেব্রুয়ারি: মোবাইল-ইন্টারনেটের কুপ্রভাব? তেমনটাই ইঙ্গিত মনোবিদদের একাংশের। মাত্র ১৯-২০ বছরের তরতাজা এক যুবক। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল এই বয়সেই। তা সত্ত্বেও প্রেমে ব্যর্থতা বা সম্পর্ক বিচ্ছেদের মতো একটি অতি সাধারণ ঘটনার কারণে চিরতরে নিজের জীবন শেষ করে দিল এই বয়সেই। সেটাও আবার ভিডিও বার্তা দিয়ে এবং পুরো ঘটনাটি ভিডিও রেকর্ডিং করে! শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের রত্নেশ্বরবাটী পালপাড়ায়। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলাজুড়ে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রণয় ঘটিত সম্পর্কে বিচ্ছেদের কারণেই নিজের মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড অন করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বছর ১৯’এর ওই যুবক। যুবকের নাম অমর পাল বলে জানা যায়। বাড়ি রত্নেশ্বরবাটী পালপাড়া এলাকায়। আত্মহত্যার ঠিক আগের মুহূর্তে মোবাইলে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করে অমর জানিয়েছে, “সরি, আমার বন্ধুরা, বাবা-মা…আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু, যার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাকে, তার পরিবারকে ছেড়োনা!…আমি আর অন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। ভালো থেকো সবাই।” ওই ভিডিও-বার্তা (সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট) সমাজমাধ্যমে নিজেই পোস্ট করে অমর। এরপরই, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে পড়ে বছর ১৯’র ওই যুবক। তবে, সেই ঘটনাটিও ক্যামেরা বন্দী করে রাখার জন্য ভিডিও রেকর্ড অন করে পুরো ঘটনা ঘটায় সে। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যে (সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট)। যা ইতিমধ্যে পুলিশের হাতে পৌঁছেছে। ঘটনার তদন্তও শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে।
জানা যায়, ওই যুবক নিজের বাড়িতেই রুপোর কাজ করতো। বাড়িতেই তার কারখানা রয়েছে। শনিবার রাত্রি সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ির ওই কারখানার ভিতরে সে এই ঘটনাটি ঘটায় বলে জানা যায়। রবিবার সকালে পুলিশ এসে যুবকের দেহ উদ্ধার করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় মোবাইলও। রবিবার দুপুরে তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ঘাটাল থানার পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, প্রণয় ঘটিত সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণেই এই ঘটনা ঘটাতে পারে যুবক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অমর পাল নামে ওই যুবকের সঙ্গে এক যুবতীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বছর দুয়েক আগে। ইদানিং সেই সম্পর্ক কোনো কারণে ভেঙে যাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিল অমর। শনিবার রাতে অন্যান্য দিনের মতোই খাওয়া-দাওয়া সেরে কারখানায় শুয়ে পড়ে অমর। রবিবার সকালে কারখানার গেট না খোলায়, সন্দেহ হয়। গেট খুলে দেখা যায় মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও রেকর্ড অন করা রয়েছে আর ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে তার নিথর দেহ! এরপরই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে। তবে, এই বিষয়ে অমরের পরিবার সহ কোনো পক্ষই আপাতত ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি!