দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ সেপ্টেম্বর: এ কোন আধুনিকতা, অন্ধকার যুগের থেকেও ভয়ঙ্কর! গ্রাম থেকে শহর ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের শৈশব থেকে কৈশোর ডুব দিচ্ছে বিভিন্ন বিদেশী গেমিং অ্যাপস আর ইউটিউব ভিডিও-তে। বন্ধুত্ব, আত্মীয়তা, ক্রিকেট, ফুটবল, ছোটাছুটি ভুলে গিয়ে স্মার্টফোনকেই আপন করে নেওয়ার এক বিপজ্জনক প্রবণতা দেখা দিয়েছে বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে। বিকেলগুলো খেলার মাঠে দৌড়োদৌড়ি করে নয়, কাটছে ‘মাথা ঝুকিয়ে’ মোবাইলের মধ্যে ডুব দিয়ে! ফ্রি-ফায়ার, পাবজি-র মতো মারণ-নেশা যুক্ত মোবাইল গেম আজ ক্রিকেট-ফুটবলের জায়গা দখল করছে! এর থেকে মুক্তি কবে মিলবে? উত্তর খুঁজতে যখন ব্যস্ত বিশেষজ্ঞরা, সেই সময়ই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত কেশিয়াড়ি ব্লক থেকে ছুটে এলো ফের দুঃসংবাদ! স্পষ্ট করে বললে মৃত্যু সংবাদ। ১৬ বছরের কিশোর আত্মহত্যা করেছে মোবাইলের জন্য! ঘৃতগ্রাম পঞ্চায়েতের ছেবদা এলাকার আকাশ খিলাড়ি শুক্রবার বিকেলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে, বাড়ির লোক মোবাইল কিনে দেয়নি বলে। মর্মান্তিক এই ঘটনা ফের একবার মোবাইলের মারণ-নেশা’র বিষয়টিকেই প্রতিপন্ন করছে।
জানা গেছে, কেশিয়াড়ি ব্লকের ঘৃতগ্রাম পঞ্চায়েতের ছেবদা এলাকার বাসিন্দা তথা বারিদা আঞ্চলিক এস সি হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র আকাশ খিলাড়ি। তার দাদা সম্প্রতি একটি নতুন স্মার্টফোন কিনেছে। এরপর, সেও দাবি জানায় তাকেও স্মার্টফোন কিনে দিতে হবে! অতি সাধারণ পরিবারের সদস্যরা বলেন, একটু অপেক্ষা করলে তাকেও কিনে দেওয়া হবে। সেই অপেক্ষা আর করতে পারলনা ১৬ বছরের আকাশ! বাড়ির লোকের অনুপস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে। শনিবার তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় কেশিয়াড়ি থানার পুলিশ। মৃতের জেঠু ফটিক খিলাড়ি জানান, “দাদা-কে মোবাইল কিনে দেওয়ার পর ওরও জেদ চেপে যায়! বলে এখুনি কিনে দিতে হবে। বলা হয়, ৮-১০ হাজার টাকার ব্যাপার, একটু সময় তো লাগবে। এরপরই, কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে এই কান্ড করে বসে!” প্রশ্ন উঠছে, শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও যেভাবে ফ্রি ফায়ার, পাবজি’র মতো মোবাইল গেমের প্রভাব বাড়ছে, তার দায় কে নেবে? কবে ফের এসব থেকে মুক্ত হবে ছাত্রসমাজ? উত্তর দেবে ভবিষ্যতই!