দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ জুন: দেনার দায়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ব্যবায়ী! মৃত ব্যবসায়ীর দেহ ঘিরে পাওনাদাররা বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তাঁদের দাবি, “পাওনা টাকা না মিললে তুলতে দেওয়া হবেনা মৃতদেহ।” ঘটনা ঘিরে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকে মৃতদেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাল থানার সিংহডাঙা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যবসায়ীর নাম বিশ্বজিত চক্রবর্তী।

thebengalpost.in
পশ্চিম মেদিনীপুরে দেনার দায়ে আত্মহত্যা এক ব্যবসায়ীর :

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল থানার সিংহডাঙ্গা এলাকার ধান ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর খবর পেয়েই বাড়ির সামনে হাজির হন শতাধিক মানুষ! তাঁরা পাওনা টাকার দাবিতে বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভকারীরা বলেন, পাওনা টাকা না দেওয়া পর্যন্ত মৃতদেহ নিয়ে যেতে দেওয়া হবেনা! বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অন্তত দেড়শ চাষির ধান নিয়ে তাদের টাকা দেননি এই ব্যবসায়ী। গরীব চাষিরা এখন করবে কী? এক ফোড়ে কালীপদ কারক বলেন, “আমি বিভিন্ন চাষির কাছ থেকে ধান নিয়ে এই ব্যবসায়ীকে দিয়েছি। আমি ২ লাখ ৬৪ হাজার ২৬৫ টাকা আমি পাবো। আমার কাছে বিভিন্ন চাষি দশ, পনের, কুড়ি হাজার করে টাকা পাবে আমার কাছে। আমাকে আজ দেবো, কাল টাকা দেবো বলে ঘুরিয়েছে। আজ শুনছি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি কী করে চষিদের টাকা বেবো?” শেখ আনোয়ার ইসলাম নামে এক চাষি বলেন, আমি কুড়ি হাজার টাকার ধান দিয়েছি। টাকা পাইনি। এরকম শতাধিক চাষি ও ব্যবসায়ী আছে, যারা বিশ্বজিতের কাছ থেকে টাকা পাবে। শুনছি টাকা না দিতে পেরে আত্মহত্যা করেছে। আমাদের মতো গরীব চাষিদের কী হবে?”

thebengalpost.in
ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ :

মৃত ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যরা বলেন, “ধান ব্যবসা করত ঠিক। তবে কে কত টাকা পাবে তা আমরা জানিনা।” মৃতের এক আত্মীয় বলেন, “আমি একটু দূরে বাড়ি করে চলে গেছি। কী হয়েছে জানিনা। মৃত্যুর পর শুনছি, অনেক লোকের কাছ থেকে নাকি ধান নিয়ে টাকা দেয়নি। সেজন্য নাকি অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে! ধান নিয়ে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এসে সবাইকে টাকা দেয়। শুনছি কোন মহাজনের কাছে টাকা চোট হয়েছে। তাই টাকা দিতে পারেনি। সঠিক ঘটনা আমরা কেউ জানিনা।” জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।